ক্ষুদিরাম-বিতর্কে রাজ্য মত চায় ইতিহাসবিদদের

রাজ্য সরকার নিজেরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করলে নতুন বিতর্কের মুখে পড়তে পারে। তাই ক্ষুদিরাম-বিতর্ক নিরসনের দায়িত্ব নিজেদের হাতে না-রেখে তারা পাঁচ ইতিহাসবিদের শরণাপন্ন হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকীকে ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিতর্ক নিরসনে ইতিহাসবিদ সুমিত সরকার, সুগত বসু, সব্যসাচী ভট্টাচার্য, বিনয় চৌধুরী এবং হিমাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত জানতে চাওয়া হয়েছে।”

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪১
Share:

রাজ্য সরকার নিজেরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করলে নতুন বিতর্কের মুখে পড়তে পারে। তাই ক্ষুদিরাম-বিতর্ক নিরসনের দায়িত্ব নিজেদের হাতে না-রেখে তারা পাঁচ ইতিহাসবিদের শরণাপন্ন হয়েছে।

Advertisement

অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকীকে ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিতর্ক নিরসনে ইতিহাসবিদ সুমিত সরকার, সুগত বসু, সব্যসাচী ভট্টাচার্য, বিনয় চৌধুরী এবং হিমাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত জানতে চাওয়া হয়েছে।” সোমবার ছিল ক্ষুদিরাম বসুর ১০৭তম মৃত্যুদিবস। সেই উপলক্ষে নবান্নে মাল্যদান করেন পর্যটনমন্ত্রী ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পাঠ্যবই ঘিরে এই বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক-একটা শব্দ এক-এক ভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রাক্-স্বাধীনতা পর্যায়ে রাষ্ট্রযন্ত্র এক রকম দৃষ্টিভঙ্গিতে (বিপ্লবীদের) দেখেছে, স্বাধীনতার পরে রাষ্ট্রযন্ত্র আর এক ভাবে দেখছে। এই নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিতর্ক এড়াতেই পাঁচ ইতিহাসবিদকে বেছে নিয়েছেন তাঁরা। কারণ, সরকার এই বিতর্ক নিরসনের চেষ্টা করলে রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বাঁধার অবকাশ ছিল। ইতিহাসবিদদের একাংশ বলছেন, ভারতের জাতীয় আন্দোলনে সশস্ত্র বিপ্লবীদের ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে অভিহিত করা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সরকারি পাঠ্যবইয়ে এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করায় কংগ্রেস-বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলি সমালোচনা শুরু করেছিল। কিছু ইতিহাসবিদ এবং ইতিহাসের অনেক শিক্ষকের বক্তব্য, পরিপ্রেক্ষিত বদল হয়েছে। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকীদের আত্মত্যাগকে এখনকার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে এক করে দেখা উচিত নয়। ওঁরা স্বাধীনতা-যোদ্ধা। ওঁদের সম্পর্কে সন্ত্রাসবাদী শব্দটি ব্যবহার না-করাই ভাল।

Advertisement

এ দিন সেই বিতর্ক নিয়েই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সল্টলেকের করুণাময়ী এলাকায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সামনের চত্বর। পাঠ্যবই নিয়ে বিজেপির যুব সংগঠন যুব মোর্চার সদস্যেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের গোলমাল বাধে। কয়েক জনকে ইটপাটকেল ছুড়তেও দেখা যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী’ বলার প্রতিবাদে এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আঞ্চলিক দফতরে স্মারকলিপি জমা দেন ক্ষুদিরামের স্কুল মেদিনীপুর কলেজিয়েটের (বালক) বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়ারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহবনিতে ক্ষুদিরাম স্মৃতিরক্ষা কমিটিও বিপ্লবীকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখের প্রতিবাদ করেছে। শুক্রবারেই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস। এসইউসি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনও প্রতিবাদ জানিয়ে সে-দিন শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে স্মারকলিপি জমা দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন