ঋতুর মন বুঝেই বেড়াতে চলুন, দিশা দেবে ভিডিয়ো

চেনা জায়গা, জানা বৈশিষ্ট্য। তবু ভ্রমণ সময়োচিত হয় না বলেই দার্জিলিং-পুরুলিয়া-সান্দাকফু বা ডুয়ার্সের প্রকৃত রূপ অনেকাংশে ভ্রমণার্থীর অভিজ্ঞতার বাইরে থেকে যায়। তাই এ বার কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র কখন স্বরূপে ধরা দেয়, সেই সময় নির্দিষ্ট করে জানিয়ে পর্যটক টানতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের পর্যটন দফতর।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৪:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

এপ্রিলে পলাশে লাল হয়ে থাকে পুরুলিয়া। অথচ পর্যটকেরা সেখানে বেশি যান নভেম্বর-ডিসেম্বরে!

Advertisement

মে-তে উদ্ধত যত শাখার শিখরে রডোডেনড্রনগুচ্ছ আলো ছড়ায় দার্জিলিঙে। আম-পর্যটক পাহাড়ে যান কখন? সেই পুজোর ছুটিতে।

জুলাই-অগস্টে বর্ষারানির রূপে সবুজে সবুজ হয়ে ওঠে ডুয়ার্স। সেই সময় সরকারি জঙ্গল-সাফারি বন্ধ থাকলেও জঙ্গলের মধ্যে থাকতে বা ঘোরাঘুরি করতে বাধা নেই। অথচ তখন ভ্রমণার্থীরা সেখানে যান না। তাঁদের কাছে অধরা থেকে যায় ডুয়ার্সের সজল মাধুরী।

Advertisement

চেনা জায়গা, জানা বৈশিষ্ট্য। তবু ভ্রমণ সময়োচিত হয় না বলেই দার্জিলিং-পুরুলিয়া-সান্দাকফু বা ডুয়ার্সের প্রকৃত রূপ অনেকাংশে ভ্রমণার্থীর অভিজ্ঞতার বাইরে থেকে যায়। তাই এ বার কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র কখন স্বরূপে ধরা দেয়, সেই সময় নির্দিষ্ট করে জানিয়ে পর্যটক টানতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের পর্যটন দফতর। ঋতুর সঙ্গে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে! বিভিন্ন ঋতুতে বাংলার সমুদ্র, পাহাড়, জঙ্গলে ঘেরা চেনা জায়গাগুলির সৌন্দর্যে যে-বদল ঘটে, তা তুলে ধরা হচ্ছে ভিডিয়োয়।

পর্যটন দফতরের কর্তারা জানান, পুরুলিয়ার পলাশ, দার্জিলিঙের রডোডেনড্রন, বরফে মোড়া সান্দাকফু-ফালুট এবং বর্ষার ডুয়ার্সের অপার সৌন্দর্য ফ্রেমবন্দি করা হচ্ছে। ‘ঋতুবৈচিত্রে পশ্চিমবঙ্গ’-এর সেই সব ভিডিয়ো দেখা যাবে দফতরের ওয়েবসাইটে, সরকারি অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য জায়গার জায়ান্ট স্ক্রিনে।

পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঋতু অনুযায়ী প্রতিটি জায়গার বিশেষ সৌন্দর্য রয়েছে। সেটি মানুষের সামনে বেশি মাত্রায় তুলে ধরতেই ভিডিয়ো তৈরি করা হচ্ছে। ঘরে বসেই সেটি দেখা যাবে।’’ পুরুলিয়া, দার্জিলিং, সান্দাকফু, ডুয়ার্স— আপাতত এই চারটি জায়গার উপরেই তৈরি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচ মিনিটের ভিডিয়ো। পরিচালক অর্ণব দাসের কথায়, ‘‘কোন ঋতুতে কোন জায়গার রূপ খুলছে, রীতিমতো সমীক্ষা চালিয়ে তা ফ্রেমবন্দি করা হয়েছে।’’

অর্ণববাবু জানান, মার্চের শেষে শুরু হয়ে এপ্রিল জুড়ে পলাশবনে আগুন জ্বলতে থাকে পুরুলিয়ায়। দোলে পাহাড়ঘেরা পুরুলিয়ার এই রূপই তুলে ধরা হচ্ছে ভ্রমণপিপাসুদের সামনে। আবার জুনের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বর্ষায় কেউই প্রায় ডুয়ার্সমুখী হন না। কর্তারা বলেছেন, ‘‘ওই সময় শুধু জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকে। কিন্তু গাছগাছালি ঘেরা বৃষ্টিভেজা ডুয়ার্সের অন্য সৌন্দর্য দেখার সুযোগ রয়েছে।’’ মে মাসে রডোডেনড্রন ঘেরা দার্জিলিং আর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর বরফের চাদরে ঢাকা সান্দাকফু, ফালুটও ক্যামেরাবন্দি হচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি সেখানে থাকার জায়গার হদিসও মিলবে এই ভিডিয়োয়।

‘‘পাহাড়-সমুদ্র-জঙ্গল সবই আছে বাংলায়। তাই পর্যটক টানতে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজিতে এই ভিডিয়ো তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে,’’ বলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন