নতুন রাজ্যপালের ৬০ সঙ্গী, ঠাঁই নিয়ে হিমশিম

নতুন রাজ্যপাল আসছেন। সঙ্গে আত্মীয়স্বজন, অতিথি মিলিয়ে কলকাতায় আসছেন প্রায় ৬০ জন, তাঁর শপথ গ্রহণের সাক্ষী হতে। কিন্তু রাজভবনে এত অতিথির স্থান সঙ্কুুলান অসম্ভব। অগত্যা রাজ্যপালের অতিথিদের জন্য রাজভবনের বাইরে হোটেল-গেস্ট হাউস দেখা হচ্ছে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৭
Share:

পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। ছবি: পিটিআই

নতুন রাজ্যপাল আসছেন। সঙ্গে আত্মীয়স্বজন, অতিথি মিলিয়ে কলকাতায় আসছেন প্রায় ৬০ জন, তাঁর শপথ গ্রহণের সাক্ষী হতে। কিন্তু রাজভবনে এত অতিথির স্থান সঙ্কুুলান অসম্ভব। অগত্যা রাজ্যপালের অতিথিদের জন্য রাজভবনের বাইরে হোটেল-গেস্ট হাউস দেখা হচ্ছে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী আজ, বুধবার ইলাহাবাদ থেকে সপরিবার কলকাতায় এসে পৌঁছচ্ছেন। কাল, বৃহস্পতিবার তাঁর শপথ-অনুষ্ঠান। তার আয়োজনের প্রস্তুতিপর্ব এখন তুঙ্গে। এরই মাঝে নয়া রাজ্যপালের অতিথিদের আপ্যায়ন-পরিকল্পনা নিয়ে রাজভবন-কর্তাদের মাথাব্যথার অন্ত নেই। রাজভবন-সূত্রের খবর: কেশরীনাথ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছিলেন, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয় মিলে তাঁর সঙ্গে আসবেন ১৪ জন, রাজভবনে যাঁদের থাকার বন্দোবস্ত হয়েছে। পরে কেশরীনাথ খবর পাঠান, তাঁর আরও কিছু ব্যক্তিগত অতিথি কলকাতায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে আগ্রহী। সব মিলিয়ে অতিথির সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৬০।

আর এতেই কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক অফিসারের বক্তব্য: রাজ্যপালের স্যুইট বাদ দিয়ে রাজভবনে রয়েছে সাকুল্যে ১৬টি ঘর। সব মিলিয়ে ২৫ জনের বেশি অতিথির রাত্রিযাপন সম্ভব নয়। এ দিকে নতুন রাজ্যপালের শপথে তাঁর সঙ্গে যাঁরা আসছেন, সকলে রাজভবনেই থাকতে ইচ্ছুক। এমতাবস্থায় কী করা যায়, তা নিয়ে বিস্তর ভাবনা-চিন্তার পরে স্থির হয়েছে, রাজ্যপালের পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের জন্যই রাজভবনে ঘর বরাদ্দ হবে। বাকিদের জন্য অন্য ব্যবস্থা।

Advertisement

সেটা কী রকম?

রাজভবন সূত্রের খবর: রাজ্যপালের অতিথিদের রাখতে আপাতত দু’টি অতিথিশালা চাওয়া হয়েছে। গোলপার্কে রাজ্য সরকারের অতিথিশালা (বেদীভবন), এবং রবীন্দ্রসদনের কাছে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের গেস্টহাউসটি। এর পরেও দরকার হলে কোনও বেসরকারি হোটেল দেখতে হবে। কেশরীনাথ কাল শপথ নেওয়ার পরেও তাঁর অতিথিরা দিন দুয়েক কলকাতায় থাকবেন। ওঁদের কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, জাদুঘর, চিড়িয়াখানা-সহ বিভিন্ন দ্রষ্টব্য ঘুরিয়ে দেখানোরও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক অতীতে এমন বড়সড় পারিষদ দল নিয়ে কোনও রাজ্যপাল রাজভবনে পা রাখেননি। এনডিএ জমানার বীরেন জে শাহই হোন, কিংবা সদ্য বিদায় নেওয়া এম কে নারায়ণন কোনও রাজ্যপালের অতিথিবর্গের জন্য রাজভবনে এ হেন বিরাট আয়োজন সরকারকে করতে হয়নি। ব্যতিক্রম বলতে দেবানন্দ কুঁয়ার। যিনি অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে কিছু দিন কলকাতায় থাকাকালীন প্রায় রোজই তাঁর জনা তিরিশ-চল্লিশ অতিথিকে রাজভবনে আপ্যায়ন করা হতো। এখন রাজভবনের বাজেট ২০ কোটি টাকার কিছু বেশি। কেশরীনাথের ‘অতিথি সমাবেশ’ প্রসঙ্গে রাজভবনের এক কর্তা অবশ্য মঙ্গলবার বলেন, “নতুন রাজ্যপালের শপথে তাঁর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব আসছেন। আমরা দেখব, তাঁদের আপ্যায়নে যাতে কোনও ত্রুটি না-থাকে।” অতিথি-অভ্যাগতের সংখ্যা শেষ মুহূর্তে আরও বাড়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজভবনের একটি সূত্র।

কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে তাঁর ইলাহাবাদের বাড়ি থেকে কলকাতায় আনতে সেনাবাহিনী নিযুক্ত এডিসি ইতিমধ্যে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন। নতুন রাজ্যপাল আজ, বুধবার রাজধানী এক্সপ্রেসে হাওড়া স্টেশনে নামবেন। রাজ্যের কোনও মন্ত্রী যাবেন তাঁকে স্বাগত জানাতে। স্টেশনেই তাঁকে একপ্রস্ত গার্ড-অব-অনার দেওয়া হবে। সেখান থেকে আত্মীয়-স্বজন ও ব্যক্তিগত অতিথি-সহ তাঁকে আনা হবে রাজভবনে। রাজভবনের নতুন অতিথিকে ফের এক দফা গার্ড-অব-অনার দেবে ঘোড়-পুলিশের একটি দল। কাল, বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। কলকাতা হাইকোর্টের কার্যনিবাহী প্রধান বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন রাজ্যপালকে শপথ পাঠ করাবেন।

শপথগ্রহণ সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে চা-চক্রে মিলিত হবেন কেশরীনাথ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন