ফাইল চিত্র।
সুসংহত উপকূল পরিচালন প্রকল্প (আইসিজেডএমপি)-এর টাকায় সাগরদ্বীপে কপিল মুনির মন্দিরের সামনে ডালা আর্কেড তৈরি হয়েছে। কিন্তু তারই নাকের ডগায় বেড়ে চলা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ হয়নি!
চেন্নাই আইআইটি-র সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, সাগরদ্বীপের পূর্ব পাড় ভয়াবহ ভাঙনের কবলে। ফি-বছর ১০ মিটার করে তলিয়ে যাচ্ছে মন্দিরের সামনের সৈকতের অংশ। স্থানীয় সূত্রের খবর, সাগরের ভাঙনে তিন বার কপিল মুনির মন্দির গড়তে হয়েছে। বর্তমান মন্দিরটি সত্তরের দশকে তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে সেখানে ভাঙন রোধ এবং সৌন্দর্যায়নের প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য। বরাদ্দ ১৬০ কোটি টাকা। দিঘা ও শঙ্করপুরে যে-ভাবে ভাঙন রোধ ও সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে, সেই ধাঁচেই কাজ হবে সাগরদ্বীপে।
মূলত বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় চলা আইসিজেডএম প্রকল্পে এ রাজ্যে কী ধরনের কাজ হয়েছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে বারবার। সাগরদ্বীপের ভাঙনের ঘটনা ফের সেই প্রশ্ন উস্কে দিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা কেন্দ্রীয় সরকারকেই দুষছেন। তাঁর বক্তব্য, ২০১৫ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী সাগরদ্বীপে এসে ৩০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই অনুযায়ী ভাঙন রোধের জন্য খড়্গপুর আইআইটি-কে দিয়ে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ করে ‘ডিপিআর’ বা সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করানো হয়। কিন্তু কেন্দ্র টাকা না-দেওয়ায় কোনও কাজ হয়নি।
বঙ্কিমবাবু জানান, আইসিজেডএম প্রকল্পে ২০১২-’১৩ সালে পাওয়া ১০০ কোটি টাকায় মন্দিরের সামনে ডালা আর্কেড, বিদ্যুৎ, রাস্তা, জল প্রকল্পের কাজ হয়েছিল। তাঁর দাবি, এ বার নগরোন্নয়ন দফতরের টাকায় ভাঙন রোধের কাজ করবে সাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। ‘‘আধুনিক প্রযুক্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যাপারে চেন্নাই আইআইটি-কে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়েছে। চলতি বছরে কাজ শুরু হবে,’’ বলেন বঙ্কিমবাবু।
দিঘা ও শঙ্করপুরে ভাঙন রোধ ও সৌন্দর্যায়নের কাজ শেষ করেছে রাজ্য সরকার। সে-ভাবেই সাগরদ্বীপে ভাঙন রোধ ও সৌন্দর্যায়নের কাজ করতে চায় পর্ষদ। ভাঙন রোধের কাজে নিযুক্ত নোডাল অফিসার দীপক মাইতির কথায়, ‘‘চেন্নাই আইআইটি-র ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চার অধ্যাপক মাস দুয়েক আগে সাগরদ্বীপের সৈকত ঘুরে দেখেছেন। ওঁরা রিপোর্ট জমা দিলেই কাজ শুরু হবে।’’ পর্ষদের কার্যনিবাহী আধিকারিক জয়ন্ত মণ্ডল জানান, উপকূলীয় বিধি মেনে অনুমোদনের প্রাথমিক
কথাবার্তা হয়েছে।