Anubrata Mandal

Anubrata Mandal: আপনার কী কষ্ট হচ্ছে? সিবিআই আদালতে বিচারকের প্রশ্নের জবাবে অনুব্রত যা বললেন...

গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করানো হলে ২০ অগস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ২০:৩৪
Share:

অনুব্রত মণ্ডল

গরুপাচার মামলায় বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। বিকেল ৫টায় তাঁকে আসানসোলের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হলে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। আদালতে সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র। অনুব্রতের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী সঞ্জীবকুমার দাঁ, সোমনাথ চট্টরাজ এবং শেখর কুন্ডু। শুনানি শুরু হতেই অনুব্রতকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে রাখতে সওয়াল করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। অনুব্রতের আইনজীবীরা যদিও পাল্টা জামিনের আবেদন করেননি। তবে বৃহস্পতিবার অনুব্রতকে গ্রেফতারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর পর অনুব্রতের কাছে তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিশদে জানতে চান তিনি। বীরভূমের তৃণমূল নেতাও বিচারককে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। তার পরেই বিচারক নির্দেশ দেন, হেফাজতে থাকাকালীন ধৃত তৃণমূল নেতার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। তার জন্য তিন চিকিৎসকের একটি দলও গড়ে দিয়েছেন বিচারক।

Advertisement

বৃহস্পতিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুব্রত-মামলার শুনানিতে কী কী—

সিবিআই আইনজীবী: অনুব্রত মণ্ডলের নামে প্রচুর বেআইনি সম্পত্তি রয়েছে। তাঁর ট্রান্সপোর্টের ব্যবসাও আছে। সমস্ত কিছুই গরুপাচার মামলার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দেহরক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর নামেও প্রচুর সম্পত্তির হদিস মিলেছে। তাঁর বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা পড়েছে। এ ছাড়াও গরুপাচার-কাণ্ডে অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে যে অনুব্রত মণ্ডলের যোগাযোগ রয়েছে, তারও প্রমাণ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে ফোনে কথাও হয়েছে। অনুব্রতের প্রভাব রয়েছে। প্রভাব খাটিয়ে উনি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডেকে নিতে পারেন। আমরা শুধু জানতে চাইছি, ২০১৪ সালের পর অনুব্রত মণ্ডলের সম্পত্তি এতটা বাড়ল কী ভাবে? অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর সম্পতি নিয়ে আগেও প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু উনি তার কোনও উত্তর দেননি। অনুব্রত মণ্ডলকে সাক্ষী হিসাবেই ডাকা হচ্ছিল। তার পরেও উনি হাজিরা দেননি। আমাদের উত্তরের জবাব দেননি। তাই ওঁকে আমাদের হেফাজতে নিতেই হবে।

Advertisement

অনুব্রতের আইনজীবী: যে ভাবে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা ঠিক পদ্ধতি নয়। তাঁকে আরও সময় দেওয়া উচিত ছিল।

বিচারক: আপনার মক্কেলকে ১০ বার ডাকা হয়েছে। তার মধ্যে এক বার মাত্র হাজিরা দিয়েছেন উনি। আরও সময় চাই? আর কত সময় দেওয়া হবে? ওঁকে তো সাক্ষী হিসাবে ডাকা হয়েছিল।

এই সওয়াল জবাবের পর অনুব্রতের সঙ্গে কথা বলতে চান বিচারক।

বিচারক: আপনার কী কষ্ট হচ্ছে? কী অসুবিধা হচ্ছে বলুন?

অনুব্রত: আমি খুবই অসুস্থ। আমার শ্বাসকষ্ট আছে। ব্লকেজ রয়েছে। বুকে ব্যথা। কিডনির দোষ আছে বলে পা ফুলে যাচ্ছে। ফিসচুলা আছে। আর প্রেসারও ভীষণ হাই (উচ্চ রক্তচাপ)।

শুনানি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টা পর বিচারকের নির্দেশ হাতে আসে। নির্দেশে বলা হয়, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন অনুব্রত যদি অসুস্থ হন, তা হলে তাঁকে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। বিচারক তিন চিকিৎসকের একটি দলও গড়ে দিয়েছেন। সেই দলে এক জন মেডিসিন, এক জন কার্ডিয়োলজিস্ট এবং এক জন এমএস(সার্জারীর চিকিৎসক) রয়েছেন। তাঁরা পরামর্শ দিলে তবে অনুব্রতকে হাসপাতালে ভর্তি করানো যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন