নতুন করে নাম তুলতে গেলেও জানাতে হবে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে যোগসূত্র। — ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের খসড়া তালিকা এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। তবে খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা সকাল থেকেই দেখে নিতে পারছেন ভোটারেরা। এই খসড়া তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে না, তাঁদের ভোটার তালিকায় নতুন করে নাম তোলার জন্য আবেদন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পূরণ করতে হবে কমিশনের দেওয়া ফর্ম ৬। এ ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি থাকছে কমিশনের। নতুন করে নাম তোলার জন্যও এসআইআর প্রক্রিয়ার মধ্যে আসতে হবে ভোটারদের। ফর্ম ৬-এর সঙ্গে এনুমারেশন ফর্মের মতো দেখতে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে তাঁদেরও।
গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যে এসআইআরের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল কমিশন। সে দিন পর্যন্ত রাজ্যে মোট ভোটার ছিলেন ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯। কমিশন সূত্রে খবর, ৭ কোটি ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩১ জনের নাম থাকছে খসড়া তালিকায়। বাদ পড়েছে ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮ জনের নাম। মূলত মৃত, স্থানান্তরিত, নিখোঁজ এবং ভুয়ো ভোটারেদের নামই বাদ পড়েছে এই তালিকা থেকে। তবে এমনও অনেকে রয়েছেন, যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেননি। রাজ্যে ৫৭ হাজার ৬০৪ জন রয়েছেন, যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেননি। তাঁদের নামও রয়েছে ওই ৫৮ লক্ষের মধ্যে।
যাঁরা আগে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেননি, তাঁদের এখন ভোটার তালিকায় নাম তুলতে হলে নতুন করে আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের জন্য থাকবে ফর্ম ৬। সেটির সঙ্গে আরও একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে তাঁদের। সেটিও দেখতে এনুমারেশন ফর্মের মতোই। সেখানেও ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে যোগসূত্র জানতে চাওয়া হবে।
আগে নতুন করে নাম তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্মতারিখের প্রমাণ রয়েছে, এমন একটি নথি দিতে হত। তার সঙ্গে বাবা-মায়ের (অভিভাবকের) ভোটার কার্ডের তথ্য দিতে হত। এ বার এসআইআর প্রক্রিয়ায় সেই নিয়মে আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। বদলেছে নিয়মও। ফর্ম ৬-এর সঙ্গে পৃথক একটি ফর্মও পূরণ করতে হবে নতুন করে তালিকায় নাম তুলতে চাওয়া ভোটারদের। ওই ভোটারের ২০০২ সালের তালিকায় নাম থাকলে, সেই তথ্য জানাতে হবে কমিশনকে। অন্যথায়, তাঁর বাবা, মা, ঠাকুরদা, ঠাকুরমার মধ্যে কোনও এক জনের ২০০২ সালের ভোটার তালিকার তথ্য জানাতে হবে। এনুমারেশন ফর্মে যে ভাবে তথ্য দিতে হয়েছিল, সেই ভাবেই তথ্য দিতে হবে এ ক্ষেত্রেও। এনুমারেশন ফর্মের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ভোটারের আধার নম্বর (ঐচ্ছিক) উল্লেখ করার জায়গা ছিল। এই ফর্মে অবশ্য সেই অংশটি থাকছে না।
এনুমারেশন ফর্মের মতো এই ফর্মেও তিনটি পঙ্ক্তি থাকবে। একটি উপরে। দু’টি নীচে। উপরের পঙ্ক্তি তে যিনি ভোটার তালিকায় নতুন নাম তুলতে চাইছেন, তাঁর যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। এ ছাড়া নীচে আরও দু’টি পঙ্ক্তি থাকছে এনুমারেশন ফর্মের মতো। যদি আবেদনকারীর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকে, তাঁর জন্য একটি পঙ্ক্তি থাকছে। অপর পঙ্ক্তিটি থাকছে আবেদনকারীর যে আত্মীয়ের নাম ২০০২ সালের তালিকায় রয়েছে, তাঁর তথ্য দেওয়ার জন্য। এই ফর্মের ক্ষেত্রেও বুথস্তরের আধিকারিক (বিএলও)-এর সই থাকবে।
কমিশন সূত্রে খবর, যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেছেন তাঁদের সকলেরই নাম রয়েছে খসড়া তালিকায়। এমনকি যাঁরা শুধু সই করে জমা দিয়েছেন, তাঁদেরও নাম রয়েছে তালিকায়। জীবিত ভোটারকে মৃত বলে গণ্য করা হয়েছে, এমন কোনও তথ্য কমিশনের কাছে নেই বলেই খবর। পাশাপাশি যাঁরা নতুন ভোটার হবেন বা যাঁদের নাম আগে ভোটার তালিকায় ছিল, এখন বাদ পড়ে গিয়েছে— তাঁরা ফর্ম ৬-এর মাধ্যমে ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন জানাতে পারবেন। এ ছাড়া যাঁরা অন্য রাজ্য থেকে এসে এ রাজ্যের ভোটার হতে চান, তাঁদের জন্য থাকছে ফর্ম ৮। তাঁদেরও এনুমারেশন ফর্মের মতো দেখতে ওই ফর্ম পূরণ করতে হবে ফর্ম ৮-এর সঙ্গে।