বিধানসভাতে বিজেপির মৃদু সুরে জল্পনা

বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে সরকারের বিরুদ্ধে যতই সুর চড়াচ্ছে বিরোধী কংগ্রেস এবং বাম, ততই জল্পনা বাড়ছে বিজেপি-র ভূমিকা নিয়ে।চলতি অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের উপরে গুচ্ছ গুচ্ছ সংশোধনী জমা দিয়েছিল কংগ্রেস এবং বাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৫
Share:

বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে সরকারের বিরুদ্ধে যতই সুর চড়াচ্ছে বিরোধী কংগ্রেস এবং বাম, ততই জল্পনা বাড়ছে বিজেপি-র ভূমিকা নিয়ে।

Advertisement

চলতি অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের উপরে গুচ্ছ গুচ্ছ সংশোধনী জমা দিয়েছিল কংগ্রেস এবং বাম। রাজ্যপালের ভাষণ থেকে সরকারের প্রশংসামূলক বিভিন্ন বিষয় তুলে তুলে তথ্য দিয়ে তারা দেখিয়েছে, সেগুলির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। কিন্তু বিজেপি অন্যতম বিরোধী দল হলেও তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনও সংশোধনী আসেনি। সম্পত্তি রক্ষার বিল নিয়ে বিধানসভায় ধুন্ধুমার হয়েছে। ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তখনও বিধানসভায় চুপ করেই বসে থেকেছেন বিজেপি-র তিন বিধায়ক— দিলীপ ঘোষ, স্বাধীন সরকার এবং মনোজ টিগ্গা।

বিধানসভায় বৃহস্পতিবার শিক্ষা বিল নিয়ে আলোচনার সময় বিরোধী দল হিসাবে সেখানে ছিল কেবল বিজেপি-ই। তখন দিলীপবাবু ওই বিলে কিছু পরিবর্তন আনার পরামর্শও দেন। কিন্তু বাকি বিরোধীদের একাংশের মতে, দিলীপবাবু না থাকলে একেবারে বিরোধীশূন্য বিধানসভায় বিল পাশ করাতে হত সরকারকে। সেটা তাদের ভাবমূর্তির পক্ষে ভাল হত না। সে ক্ষেত্রে অন্তত এক জন বিরোধী থাকায় সরকারের সুবিধাই হয়েছে। বস্তুত, বৃহস্পতিবার দিলীপবাবুও বলেছিলেন, ‘‘শিক্ষা বিল নিয়ে বক্তার তালিকায় আমার নাম ছিল না। আমি তৈরি হয়েও আসিনি। অন্য দিন আমায় বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। কিন্তু শিক্ষা বিলের সময় অন্য বিরোধীরা না থাকায় নিজেদের বাধ্যবাধকতা থেকে শাসক পক্ষ আমায় বলতে দিয়েছে।’’

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস এবং বাম শিবিরের বক্তব্য, বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে বিজেপি এমন একটা হাওয়া তৈরি করার চেষ্টা করছিল, যেন তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তারাই। ওই সময় গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি করে হইচই বাধাচ্ছিল তারা। সেই বিজেপি-ই ধীরে ধীরে যে তৃণমূল সম্পর্কে সুর নরম করছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল ভাঙড়, আউশগ্রামের মতো ঘটনার পরে তাদের নিষ্ক্রিয়তা দেখে। এর পরে বিধানসভা অধিবেশনেও বিজেপি-কে তৃণমূলের কড়া বিরোধিতা করতে না দেখে সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।

বিডেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের এই ভূমিকায় দলের একাংশও অসন্তুষ্ট। তাদের আশঙ্কা, বিধানসভায় কড়া অবস্থান নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তৃণমূল-বিরোধী জনমতের বিজেপি-র উপরে আস্থা রাখার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি, সিপিএম থেকে কর্মী এনে দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন রাজ্য নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা কৃশানু মিত্র এই মর্মে আক্ষেপ করে টুইট করেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র স্থানীয় স্তরে প্রাক্তন সিপিএম কর্মীদের আধিপত্য বাড়ছে। তাঁরা এক সময় সিপিএমের সন্ত্রাসের রাজত্বের সৈনিক ছিলেন। ভাড়াটে সৈনিক জনতার রায় আমাদের পক্ষে এনে দিতে পারবে না।’’

বস্তুত, রাজ্য নেতৃত্বের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ দলের একটা বড় অংশ ‘শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্মৃতি রক্ষা কমিটি’ নামে মঞ্চ গড়ে জেলায় জেলায় সমান্তরাল রাজনৈতিক কর্মসূচি চালাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement