প্রতীকী ছবি।
বিজেপি বড় বালাই! তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাই কংগ্রেসের জন্যও দরজা খোলা রাখতে চান দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। জাতীয় পরিষদে আলোচনার পরে সম্প্রতি কলকাতায় এসে সাধারণ সম্পাদক সুধাকর রেড্ডি সে কথা স্পষ্টও করে দিয়েছেন। কেরলের রাজ্য নেতৃত্বও প্রকাশ্যে কংগ্রেসের পক্ষে সওয়াল করছেন। কী করবে বাংলার সিপিআই? আগামী মাসে দলের রাজ্য সম্মেলনে বিবেচ্য সেটাই।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে আগামী ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর রাজ্য সম্মেলন বসবে সিপিআইয়ের। সিপিএমের মতো কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে আটকে না থেকে নানা জেলায় ঘুরে ঘুরে রাজ্য সম্মেলন করে সিপিআই। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসতে পারে, এমন ধারণা থেকে রাজ্য সম্মেলন মাসদুয়েক এগিয়ে এনেছেন সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব। সংগঠনকে জোরদার করে আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশিই পার্টি কংগ্রেসের আগে রাজনৈতিক লাইন নিয়ে বিতর্ক হবে তমলুকে।
রাজ্যে গত বছর বিধানসভা ভোটের সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার পক্ষপাতী ছিল না সিপিআই। নির্বাচনে বামেদের বিপর্যয়ের পরে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতাকে দায়ীও করেছিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গেরুয়া পরিবারের দাপট দেখে সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে একজোট করার পক্ষে। সেই কৌশলই কেরলের কোল্লমে আগামী এপ্রিলের পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত হওয়ার কথা। সেই নিরিখে রাজ্যে দলের অবস্থান ঠিক করতে হবে প্রবোধ পণ্ডাদের। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আগামী ৬-৭ ডিসেম্বর রাজ্য পরিষদে আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমেই রাজ্য সম্মেলনের খসড়া দলিল চূড়়ান্ত হবে।’’
লাইন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্বে রদবদলের সম্ভাবনা অবশ্য কম। রাজ্য সম্পাদক হিসাবে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব পেতে পারেন প্রবোধবাবুই। রাজ্যে এখন সিপিআইয়ের একমাত্র বিধায়ক তমলুক থেকেই। সাংসদ শূন্য। দলীয় সূত্রের খবর, সদস্যসংখ্যা কমতে কমতে রাজ্যে এখন এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। ক্ষয়িষ্ণু সংগঠনকে আন্দোলনের পথে রাখাই রাজ্য সম্মেলনের লক্ষ্য। ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে জেলা সম্মেলনের পর্ব। কলকাতার জেলা সম্মেলন যেমন বসবে আগামী ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর চেতলায়। উদ্বোধন করার কথা দলের উপ সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্তের।
সিপিআইয়ের মতো কংগ্রেস-প্রশ্নে দ্বিমত আছে সিপিএমেও। পার্টি কংগ্রেসের আগে সিপিএম অবশ্য বিজেপি-র বিরুদ্ধে লাগাতার পথে নামারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর বাবরি ধ্বংসের দিন ‘কালাদিবস’ পালনের ডাক দিয়েছে পলিটব্যুরো। কলকাতায় আজ, বৃহস্পতিবার উদ্বাস্তুদের দাবি নিয়ে সমাবেশ করবে তারা। কাল,শুক্রবার মহিলা সংগঠনের কর্মসূচিতে থাকবেন বৃন্দা কারাট। কয়েক দিনের মধ্যেই শহরে সমাবেশ হবে আদিবাসী ও দলিত সংগঠনের মঞ্চ থেকে। বিজেপি সরকারের আমলে বিভিন্ন অংশের মানুষ কী ভাবে বিপন্ন, তা তুলে ধরাই সিপিএমের উদ্দেশ্য।