রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের বিরুদ্ধে খুন এবং অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
নিউ টাউনে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা খুনে অভিযুক্ত বিডিও প্রশান্ত বর্মণ ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজের সময় কেন অফিসে অনুপস্থিত? এসআইআরের সময় তাঁর গরহাজিরার ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন জেলা নির্বাচনী আধিকারিক। অন্য দিকে, বিধাননগর পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বিডিওর বিরুদ্ধে খুন ও অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত ২৯ অক্টোবর নিউ টাউন থানা এলাকার যাত্রাগাছি থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৪০ বছরের স্বপনের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ব্যবসায়ীর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরে। সল্টলেকের কাছে দত্তাবাদে তাঁর গয়নার দোকান। স্বর্ণকারের পরিবারের অভিযোগ, তাঁর মৃত্যুর আগের দিন, অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর গয়নার দোকানে হাজির হয়েছিলেন রাজগঞ্জের বিডিও। স্বপন এবং ওই বাড়ির মালিক গোবিন্দ বাগকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। চুরির গয়না স্বপনের দোকানে বিক্রির তদন্ত করতে গিয়ে ওই পদক্ষেপ করেন। ঠিক তার পরের দিনই স্বর্ণকারের দেহ উদ্ধার হয়। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে গত দু’দিন বিডিওর খোঁজ মেলেনি। তিনি জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের ব্লক অফিসে যাননি বলে দাবি করেন সেখানকার কর্মীরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই বিডিও ছুটির আবেদনও করেননি। তবে শুক্রবার প্রশান্তকে জলপাইগুড়িতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে এসআইআর সংক্রান্ত বৈঠকে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়ে প্রশান্তের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি রাজগঞ্জে আসার পর এই ব্লকে অনেক দুর্নীতি বন্ধ করে দিয়েছি। সংবাদমাধ্যম আমাকে ‘দাবাং বিডিও’ বলেছে। ঠিকাদারদের দুর্নীতি বন্ধ করে দিয়েছি। টিভি চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে, যিনি চোর, তিনি সংবাদমাধ্যমে বড় গলায় কথা বলছেন। যিনি সোনা গলিয়েছেন, তাঁর পরিবারও বড় গলায় কথা বলছে। এটা থেকে বোঝা যাচ্ছে এতে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত আছে।’’ তিনি এ-ও বলেন, রাজবংশী সম্প্রদায়ের বলে নানা ভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন তিনি।
অন্য দিকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন কেন ওই বিডিও অফিসে উপস্থিত ছিলেন না, তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এ-ও শোনা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেছে কি না, জেলাশাসক শমা পরভিনের কাছে তা জানতে চেয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল।
রাজগঞ্জে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনে তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্বে ছিলেন প্রশান্ত। অভিযোগ উঠেছে, তিনি কলকাতায় চোরাই সোনা উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বিডিও স্তরের কোনও আধিকারিককে নিজের কাজের এলাকা ছেড়ে বাইরে যেতে হলে জেলাশাসকের অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নের জবাব মেলেনি।