লন্ডভন্ড: দাড়িভিট স্কুলের ভিতরে এখনও এ ভাবেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভাঙাচোরা আসবাব এবং বহু নথি। সোমবার। ছবি: অভিজিৎ পাল
শিক্ষক নিয়ে এত মানুষের ক্ষোভ— দল কেন জানতে পারল না, সেই খোঁজ শুরু করল তৃণমূল। একইভাবে দল বা প্রশাসনকে এড়িয়ে স্থানীয়রা নিজেরাই কেন সংঘাতে জড়ালেন—ইসলামপুরের অশান্তির পরে তা-ও ভাবাচ্ছে শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্বকে।
ইসলামপুরের দাড়িভিট অঞ্চলে পঞ্চায়েত পর্যন্ত যথেষ্টই শক্তিশালী তৃণমূল। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসাবে জিতলেও স্থানীয় বিধায়কও এখন শাসকদলের সঙ্গেই। তারপরেই প্রায় আচমকা এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বিস্মিত তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। সমস্যা হতে পারে জেনেও কেন এত মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে দুই শিক্ষকের নিয়োগের চেষ্টা হয়েছিল, তা বিশ্লেষণে এই জোড়া প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তাঁদের। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ ছিল। তা যাই হোক, আমাদের কাছে কেন পৌঁছয়নি দেখতে হবে।’’
ঘটনার পর তিন দিনে অসংখ্যবার স্থানীয় বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল কথা বলেছেন জেলা দলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। কিন্তু আগে এ ব্যাপারে কেন দলকে সতর্ক করেননি তিনি? বিধায়কের জবাব, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আগে এত অগ্নিগর্ভ অবস্থা ছিল না।’’ না কি গ্রামের পরিস্থিতি তিনি জানতে পারেননি? তাঁর কথায়, ‘‘কেউ আমাকে আগে সেভাবে কিছু বলেননি। আমি ১৮ তারিখে জানার পরই যা পেরেছি, করেছি।’’ দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রশ্ন, শিক্ষক নিয়োগের জন্য বড় বাহিনী নিয়ে যেতে হয়েছিল পুলিশকে। তা থেকেই প্রতিকূলতা বোঝা যায়। জেলা থেকে এই তথ্য কেন রাজ্য স্তরে জানানো হয়নি, তা-ও নজরে রয়েছে শাসক নেতৃত্বের।
ঘটনার পর পঞ্চায়েতের স্থানীয় দলীয় সদস্যকে সঙ্গে নিয়েই ক্ষত মেরামতির চেষ্টা শুরু হয়েছে। কিন্তু ঘটনার দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাঁর প্রভাব খুব বেশি কাজে আসেনি। বরং শাসকদলের তরফে স্পষ্ট অভিযোগ ছিল, স্থানীয়দের ক্ষোভকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগাতে উস্কানি দিয়েছে বিরোধীরা।
অশান্তির জন্য নবান্নের তরফেও কাঠগ়ড়ায় তোলা হয়েছে বিজেপি-আরএসএস-কে।