মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
গুজব, গোলমাল যাতে না ছড়ায়, তার জন্য আগেই পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলায় শাসক দল কেন নিষ্ক্রিয়, নেতা-কর্মীদের কাছে তার কৈফিয়ৎ চাইলেন তৃণমূল নেত্রী।
পুলওয়ামা-কাণ্ডের পরে দেশপ্রেমের নামে এ রাজ্য-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গুজব, গোলমালের ঘটনা ঘটছে। দিন কয়েক আগে বেহালায় গভীর রাতে বাইক-বাহিনী ‘ভারতমাতা কী জয়’ বলে ঘুরে বেড়িয়েছে। ওই এলাকা তৃণমূলের দখলে থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এই বাইকবাহিনী এলাকায় ‘তাণ্ডব’ করার সুযোগ পেল, সে প্রশ্নের জবাব জানতে চাইলেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। সোমবার নজরুল মঞ্চে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের ভরা সভায় মঞ্চে বসা পার্থবাবুকে মমতার প্রশ্ন, ‘‘রাত ১২টা, ১টায় কী ভাবে বেহালায় বাইক বাহিনী মিছিল করেছিল? রাত ১টায় যারা এলাকায় তাণ্ডব করে, তারা ডাকাত, গুন্ডা। ওরা যে তাণ্ডব করতে বেরিয়েছে, আপনারা জানতেন না? ওদের যে তাড়া করতে হয়, পুলিশের হাতে তুলে দিতে হয়, জানেন না?’’
বেহালার তিন কাউন্সিলর অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য এবং অশোকা মণ্ডলের নামোল্লেখ করেও মমতা সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘তোমরা এলাকা দেখ না?’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীও কেন এ ধরনের গুজব, গোলমাল মোকাবিলায় সক্রিয় নন, তার জবাবও চেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
শাসক দলের নেতাদের এই নিষ্ক্রিয়তার পিছনে কোনও ভয় কাজ করছে কি না, তাও প্রকাশ্যেই জানতে চান মমতা। দৃশ্যত ক্ষুণ্ণ মমতা সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘ভয় পাচ্ছেন? দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন? খোলাখুলি বলুন। আসুন খোলাখুলি আলোচনা হোক।’’
আরও পড়ুন: প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে ঘাটতি নয়, পুলিশকে বার্তা মমতার
ভরা সভা তখন সমস্বরে ‘না’ বলে জবাব দেয়। মমতা ফের কর্মীদের সতর্ক করে আবেদন করেন, ‘‘বিদেশে থাকা আরএসএস-দের জেলায় জেলায় বসিয়ে দিয়েছে ওরা। মানুষকে ডেকে তাদের মাথায় আরএসএস ঢোকানো হচ্ছে। সতর্ক থাকুন। কিছু সন্দেহজনক দেখলেই পুলিশে খবর দিন। শান্ত থাকুন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই দোষারোপের জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে উনি অন্যকে দোষ দিচ্ছেন। নিজের সাংগঠনিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। তাই হতাশা থেকে এ সব বলছেন। কেউ অন্যায় করে থাকলে প্রশাসন তাকে ধরছে না কেন?’’