সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে গত বিধানসভা ভোটে তাঁর রাজনীতিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শোনা গিয়েছিল, তাঁকে ‘মুখ্যমন্ত্রী-মুখ’ করেই ভোটের ময়দানে নামতে পারে বিজেপি। যদিও শেষ পর্যন্ত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছিলেন। আসন্ন বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আবার নতুন করে জল্পনা তৈরি হওয়ায় তারও জবাব দিলেন ‘মহারাজ’।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর সাক্ষাৎকারে সৌরভকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে চান কি না। জবাবে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ স্বভাবসিদ্ধ হাসিতে বললেন, ‘‘আমার কোনও ইচ্ছে নেই।’’
সৌরভের কাছে পরের প্রশ্ন ছিল— তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হলে কি তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবেন? তার জবাবেও সৌরভ বলেন, ‘‘আমার কোনও ইচ্ছে নেই।’’
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা ভোটের সময় সৌরভের রাজনীতিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় আনন্দবাজার ডট কম-কে বলেছিলেন, ‘‘ও (সৌরভ) যে পিচেই খেলুক না কেন, তাতেই সেরা হয়। হয়তো স্বাভাবিক অবস্থা থেকে শুরু করে, কিন্তু ঠিক শীর্ষে পৌঁছয়। যদি রাজনীতিতে যোগ দেয়, তা হলে আশা করছি, হি উইল ফিনিশ দ্য টপ।’’
শোনা যায়, ২০২১ সালের আগে সৌরভকে সরাসরি বাংলার বিধানসভা ভোটে তাদের ‘মুখ’ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি। ওই বছর ব্রিগেডে নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি পদ্মশিবিরে যোগদান করতে পারেন বলেই শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সে সব কিছুই ঘটেনি। সব জল্পনা জল্পনাই থেকে গিয়েছিল। কখনওই তা বাস্তব রূপ নেয়নি।
সৌরভের ঘনিষ্ঠদের দাবি, ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচনে লড়তে চান না। তবে বিজেপির হয়ে প্রচার করতে পারেন, যদি পরে বিজেপি তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায়। বাংলার তৎকালীন ‘প্রভারী’ সৌরভের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু অমিত শাহ সেই প্রস্তাব মানতে রাজি হননি। তিনি-সহ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব চেয়েছিলেন, সৌরভ বিজেপির হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বিরুদ্ধে ভোটে লড়ুন। যদিও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও পক্ষই কখনও মুখ খোলেনি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বরং এমন আলাপ-আলোচনার কথা উড়িয়েই দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু তার পরেও সৌরভ-বিজেপির সম্পর্ক প্রকাশ্যে ‘আন্তরিক’ই থেকেছে। বিজেপির রাজ্যনেতাদের নিয়ে সৌরভের বাড়িতে নৈশভোজে গিয়েছিলেন শাহ। আবার সৌরভের সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কও বরাবরই ‘মসৃণ’। মমতাও সৌরভের বাড়িতে গিয়েছেন বেশ কয়েক বার। সাম্প্রতিক সময়ে মমতার সরকারের অধিকাংশ বাণিজ্য সম্মেলনেও সৌরভকে দেখা যায়। এ সব সত্ত্বেও তিনি যে রাজনীতিতে আসতে ইচ্ছুক নন, তা আবার জানিয়ে দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক।