পুুলিশ সেজে প্রতারণা, মায়ের অভিযোগে ধৃত মেয়ে

রত্নাদেবীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সায়নীর মোবাইল নম্বর নেয়। নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালিতে রয়েছেন সায়নী। এর পরে রত্নাদেবীকে দিয়ে সায়নীকে ফোন করানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪২
Share:

সায়নী ঘোষ

‘আমার মেয়ে কি পুলিশে চাকরি করে?’

Advertisement

এই প্রশ্ন নিয়েই বারুইপুর মহিলা থানায় হাজির হয়েছিলেন মাদারহাটের বাসিন্দা রত্না রায়। সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ থানায় গিয়ে তিনি কর্তব্যরত ওসি কাকলি ঘোষ কুণ্ডুকে জানান, তাঁর মেয়ে সায়নী ঘোষ মাসখানেক ধরে পুলিশের উর্দি পরে বাড়ি ফিরছে। তবে মেয়ে পুলিশে চাকরি পেয়েছে কি না, তা নিয়ে রত্নাদেবী নিশ্চিত নন। কিন্তু এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সায়নী টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। এমনকি, কয়েক জন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের থেকেও সায়নী টাকা নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন তিনি। পুলিশে রত্নাদেবী অভিযোগ জানান, তাঁর সন্দেহ মেয়ে পুলিশের নকল উর্দি পরে বিভিন্ন জনের থেকে টাকা আদায় করছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানান।

রত্নাদেবীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সায়নীর মোবাইল নম্বর নেয়। নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালিতে রয়েছেন সায়নী। এর পরে রত্নাদেবীকে দিয়ে সায়নীকে ফোন করানো হয়। বলা হয়, তাঁর বাবা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ সায়নী তাঁর এক বন্ধু দীপের সঙ্গে মাদারহাটের বাড়িতে ফিরতেই গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, সোমবার রাতে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ে সায়নী বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন। কিছু পরে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, তিনি অজ্ঞান হওয়ার অভিনয় করছেন। এর পরে জেরার মুখে সায়নী জানান, তাঁর বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা চলছে। বছর দুয়েক আগে তিনি মাদারহাটে ফিরে আসেন। তখন তাঁর হাতে টাকা থাকত না। বাবা-মায়ের থেকেও সব সময়ে টাকা চাইতে পারতেন না তিনি। ইতিমধ্যে প্রতিবেশী দীপের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। পুলিশের দাবি, হাতখরচ চালানোর জন্য দু’জনে মিলে পুলিশের পোশাক ভাড়া নিয়ে টাকা আদায় করতে শুরু করেন বলে জেরায় কবুল করেছেন সায়নী। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বারুইপুরের একটি পোশাক ভাড়া দেওয়ার দোকান থেকে খাকি উর্দি ভাড়া নেন সায়নী। দীপ ভাড়া নেন সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক। দু’জনে মিলে একটি স্কুটি কিনে সেটির সামনে ‘পুলিশ’ লিখে ঘুরতেন। সায়নী নিজেকে বারুইপুর মহিলা থানার সাব-ইনস্পেক্টর ও দীপ ওই থানার সিভিক ভলান্টিয়ার বলে পরিচয় দিতেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে টাকা তোলা শুরু করেন দু’জনে। পুলিশে চাকরি পেয়েছেন বলে বাড়িতে জানিয়েছিলেন সায়নী। সম্প্রতি সায়নী তাঁর এক মামার কাছ থেকেও ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন