বাংলাকে অন্য কারও কাছ থেকে ধর্ম, সংস্কৃতি, জাতীয়তাবোধ শিখতে হবে না বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এমন কথা তিনি এর আগেও বলেছেন। তবে এ বার বিষয়টিকে যুক্ত করলেন দুর্গাপুজোর সঙ্গে। বালিগঞ্জ এলাকার একটি পুজো উদ্বোধনের মঞ্চে বুধবার মমতা বলেন, ‘‘এখন কেউ কেউ বলছেন, মমতাজি তো অভি দুর্গাপুজো মে সামিল হুয়া। ওঁরা জানেন না, মমতা আজ পুজোয় সামিল হননি। যাঁরা এখন এ সব বলছেন, তাঁরা আমাকে কতটুকু জানেন! বাংলাকে কতটুকু চেনেন! ধর্ম, রাজনীতি আমাদের শেখাতে হবে না।’’
সরাসরি কারও নাম না করলেও মমতার এই মন্তব্যের ইঙ্গিত বিরোধীদের দিকেই বলে রাজনৈতিক মহলে একাংশের ধারণা। কারণ, এর আগে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মমতার অংশগ্রহণ নিয়ে সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। সংখ্যালঘু তোষণেই মমতা ওই অনুষ্ঠানগুলিতে সামিল হন বলেও বিতর্ক হয়েছে বিস্তর। এমনকী, ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়া নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। বারবারই মমতা বলেছেন, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এই বাংলার বাসিন্দা। ফলে তিনি আমৃত্যু সব ধর্মের মানুষের পাশেই থাকবেন। মমতার এ দিনের বক্তব্য সেই সব অভিযোগের পরোক্ষ জবাব বলে মনে করা হচ্ছে।
এই রাজ্যে যে কোনও রকম বিভেদকামী শক্তিকে মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতার মন্তব্য, ‘‘স্বামীজি মুসলিমের গড়গড়ায় টান দিলে তাতে স্বামীজির হিন্দুত্ব নষ্ট হয় না। এরা কারা, এরা কোথা থেকে এসেছে? এরা কী চায়?’’ নানা ভাষাভাষী ও ধর্মাবলম্বী মানুষের এই বাংলা যে সামাজিক সংস্কারের পীঠস্থান, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিদ্যাসাগর, রামমোহনের হাত ধরে সমাজ সংস্কার হয়েছে। যে দিন ভারত স্বাধীন হয়েছিল, সে দিন গাঁধীজি দেশভাগের বিরুদ্ধে অনশনের জন্য কলকাতার মাটি বেছে নিয়েছিলেন। ফলে আমাদের কারও কাছে শিখতে হবে না।’’