ডিএ মামলায় সাহায্যের আর্জি

কলকাতা হাইকোর্ট এবং রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার মামলা চলছে প্রায় তিন বছর ধরে। সময় যত যাচ্ছে, মামলা চালানোর খরচও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য ও সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৩
Share:

ফাইল চিত্র।

কলকাতা হাইকোর্ট এবং রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার মামলা চলছে প্রায় তিন বছর ধরে। সময় যত যাচ্ছে, মামলা চালানোর খরচও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। মামলাকারী সংগঠনের নেতৃত্বের হিসেব অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে মহার্ঘ ভাতা না-পাওয়ায় চারটি স্তরের চার সরকারি কর্মীর যে-পরিমাণ আর্থিক লোকসান হয়েছে, মামলার খরচ হয়েছে তার কাছাকাছি। এই অবস্থায় সমমনোভাবাপন্ন সহকর্মীদের কাছে মামলার খরচ বাবদ অর্থসাহায্য চাইছে মামলাকারী কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় সব রাজনৈতিক কর্মচারী সংগঠনের উদ্দেশেই আবেদন করছে তারা।

Advertisement

ক্ষতির সঙ্গে মামলার খরচের তুলনামূলক ব্যাখ্যায় সংগঠন জানাচ্ছে, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা ছিল ৭৫ শতাংশ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ছিল ১২৫ শতাংশ। তার ভিত্তিতে সপ্তম বেতন কমিশন পেয়ে যান কেন্দ্রীয়

কর্মীরা। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি এ রাজ্যে কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা পৌঁছেছে ১২৫ শতাংশে। যা পাওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারিতেই। এই হিসেবে ভর করে মামলাকারী সংগঠনের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ে মহার্ঘ ভাতা না-পাওয়ায় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত চতুর্থ শ্রেণির এক জন কর্মচারীর ক্ষতি হয়েছে প্রায় দু’লক্ষ ১১ হাজার টাকা। এক জন লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের প্রায় দু’লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এক জন আপার ডিভিশন ক্লার্কের ক্ষতির অঙ্ক প্রায় তিন লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। হেড অ্যাসিস্ট্যান্টের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এর উপরের পদগুলির কর্মীদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।

Advertisement

সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ থেকে এ-পর্যন্ত হাইকোর্টে ডিএ মামলার মূল শুনানি হয়েছে ৩৪টি। ৮-১০টি ‘মেনশন’ বা উল্লেখও হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল বা স্যাটে মূল শুনানি হয়েছে অন্তত সাতটি। আইনজীবীদের একাংশ ও কর্মী-নেতাদের বিশ্লেষণ, আইনি এই প্রক্রিয়া চালাতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, এত দিন ধরে মামলার খরচ চালানো হচ্ছে কী ভাবে?

কর্মী সংগঠনের নেতাদের ব্যাখ্যা, রাজ্য সরকারের বর্তমান অবস্থানের কারণে ছুটি পাওয়া যায় না বলে বার্ষিক সম্মেলন বন্ধ করতে হয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বছরে নির্ধারিত কিছু সভাও। সংগঠনের সদস্যেরা ওই সব কর্মসূচির জন্য চাঁদা দিয়ে থাকেন। জমতে থাকা সেই চাঁদার অর্থেই এত দিন ধরে মামলার খরচ চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলা বাবদ সংগঠন নেতৃত্বের অনেকেই অতিরিক্ত অর্থ সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু সেই ভাঁড়ারও এখন প্রায় খালি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মামলা যে এত দীর্ঘতর হবে, তা জানা ছিল না। এত দিন আমরা সামাল দিয়ে এসেছি। এখন অর্থসঙ্কট দেখা দেওয়ায় আমরা ইচ্ছুক সহকর্মীদের কাছে সাহায্য চাইছি।’’

সংগঠন সূত্রের খবর, সাহায্যের আবেদন জানানোর পরে ২৭ ডিসেম্বর থেকে এ-পর্যন্ত হাজার চারেক টাকা জমা পড়েছে সংগঠনের অ্যাকাউন্টে। নেতৃত্বের আশা, নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবেই সর্বস্তরের কর্মীরা মামলার জন্য অর্থ সাহায্য করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন