পল্লব চক্রবর্তী
দুর্গাপুজো মিটলেই একমাত্র ছেলের বিয়ে। প্রস্তুতি চলছিল পুরোদমে। কিন্তু সোমবার দিনহাটা থেকে ছেলের মৃত্যুসংবাদ আসায় সব আলো নিভে গেল নিউ আলিপুরের জ্যোতিষ রায় রোডের বাড়িতে।
এ দিন সকালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দিনহাটা মহকুমা আদালতের তরুণ বিচারক পল্লব চক্রবর্তীর (৩০)। কোচবিহারের কোতোয়ালির বালিয়ামাড়িতে তাঁর গাড়ির সঙ্গে অন্য একটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় নিম্ন আদালতের দেওয়ানি বিচারক পল্লববাবুর। তিনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মাথাভাঙা সড়ক ধরে দিনহাটার দিকে ফেরার সময় নম্বরপ্লেটহীন একটি গাড়ির সঙ্গে তাঁর গাড়ির ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনায় তাঁর দেহরক্ষীও জখম হন।
১৯৮৭ সালে জন্ম পল্লববাবুর। কলকাতার যোগেশচন্দ্র কলেজ থেকে আইন পাশ করে প্রথমে আইনজীবী হিসাবে কলকাতা হাইকোর্টে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। পরে জুডিশিয়াল পরীক্ষায় পাশ করে শ্রীরামপুর নিম্ন আদালতের বিচারকের দায়িত্ব নেন। সেখান থেকেই গত জুলাই মাসে বদলি হয়েছিলেন দিনহাটা আদালতে। নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ বিয়ের দিন স্থির হয়েছিল তাঁর। এ দিন সকালে দিনহাটার কর্মস্থল থেকে ছেলের মৃত্যু সংবাদ আসার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মা দোলা চক্রবর্তী। আর একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়েই দিনহাটার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বাবা কমল চক্রবর্তী এবং কাকা।
পল্লববাবুর মামা মানস গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন জানান, দিনহাটার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফোন করে পল্লববাবুর মৃত্যুসংবাদ দেন। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা জানতে চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেছেন বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনার কিছু পরেই ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ খোকন মিয়াঁ। তিনি বলেন, “ভেবেছিলাম তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো বাঁচানো যাবে। কিন্তু কিছুই করা গেল না।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব জানিয়েছেন যে গাড়িটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে তার চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।