কোর্টের পথে কুতুবউদ্দিন মণ্ডল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
মাঠের মধ্যে এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির চেষ্টা রুখে দিয়েছিলেন এক মহিলা। সেই রাগে ওই মহিলাকে শায়েস্তা করতে গিয়ে অভিযুক্ত যুবক ভুল করে অন্য এক মহিলাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে জখম করল। এই ঘটনায় কুতুবউদ্দিন মণ্ডল নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে উত্তর ২৪ পরগনার শাসন থানার পুলিশ। শনিবার বারাসত আদালতে তোলা হলে তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাসনের উত্তর ফলতি গ্রামের পশ্চিম মাঠ এলাকায় জ্বালানির জন্য তিল গাছের শুকনো ডাল সংগ্রেহ করছিল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী। অভিযোগ, সেই সময় ইটভাটার শ্রমিক কুতুবউদ্দিন ওই কিশোরীর মুখ চেপে পাট খেতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন কিছুটা দূরে ঘাস কাটছিলেন গ্রামেরই মধ্যবয়সী এক মহিলা। শনিবার ওই মহিলা বলেন, ‘‘চিৎকার শুনে আমি ভাবি, মেয়েটিকে হয়তো শিয়াল-কুকুরে ধরেছে।’’ মহিলা ছুটে যেতেই মেয়েটিকে ছেড়ে কুতুবউদ্দিন পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
কিশোরীকে বাড়িতে পৌঁছে দেন ওই মহিলা। কুতুবউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ করেন এলাকার মানুষ। তবে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যাওয়ায় পুলিশে অভিযোগ জানায়নি মেয়েটির পরিবার। শুক্রবার দুপুরে ওই মাঠে ঘাস কাটছিলেন সুফিয়া বিবি নামে গ্রামেরই এক মধ্যবয়সী মহিলা। অভিযোগ, সেই সময় কুতুবউদ্দিন একটি ধারালো হাঁসুয়া নিয়ে চড়াও হয়। মহিলাকে ফেলে কোপ মারতে থাকে। বাঁ-হাত জখম হয় মহিলার। তাঁর চিৎকারে লোক জড়ো হওয়ার আগেই পালিয়ে যায় কুতুবউদ্দিন।
স্থানীয় মানুষ সুফিয়াবিবিকে নিয়ে যায় বারাসত হাসপাতালে। হাতে ছ’টি সেলাই পড়ে সুফিয়ার। শুক্রবার রাতে শাসন থানায় অভিযোগও দায়ের করেন সুফিয়া। রাতেই কুতুবউদ্দিনকে গ্রেফতার করে শাসন থানার পুলিশ। সুফিয়ার ভাইপো আনিসুদ্দিন সর্দার এ দিন বলেন, ‘‘আমার কাকিমা ওই ঘটনার কিছুই জানতেন না। কিন্তু কুতুবউদ্দিন ভেবেছিল, কাকিমাই সেদিন মেয়েটিকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন। কাকিমাকে আঘাতের সময় সেই কথাই বারবার বলছিল কুতুবউদ্দিন।’’