অগ্রাধিকার কী, দিল্লিকে জানাতে বৈঠক নবান্নে

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মধ্যে তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় কোনগুলি, নবান্নের কাছে তা জানতে চেয়েছিল মোদী সরকার। তারই রূপরেখা তৈরি করতে শনিবার নবান্নে মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র সব দফতরের সচিবদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বিভিন্ন দফতর যে সব প্রস্তাব দিয়েছে, তা থেকে অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রকে পাঠানো হবে। তবে সবার আগে রাজ্য সরকার চায়, কেন্দ্রীয় সব প্রকল্পের ৭০ ভাগ খরচ বহন করুক দিল্লি, ৩০ শতাংশ দেবে রাজ্য।

Advertisement

সুপ্রকাশ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০৩:০০
Share:

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মধ্যে তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় কোনগুলি, নবান্নের কাছে তা জানতে চেয়েছিল মোদী সরকার। তারই রূপরেখা তৈরি করতে শনিবার নবান্নে মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র সব দফতরের সচিবদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বিভিন্ন দফতর যে সব প্রস্তাব দিয়েছে, তা থেকে অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রকে পাঠানো হবে। তবে সবার আগে রাজ্য সরকার চায়, কেন্দ্রীয় সব প্রকল্পের ৭০ ভাগ খরচ বহন করুক দিল্লি, ৩০ শতাংশ দেবে রাজ্য।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে বিভিন্ন দফতর যে সব প্রস্তাব করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, স্বামী বিবেকানন্দ পরিবহণ সার্কিট। এই প্রস্তাবে বেলুড় মঠ থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত একটি জলপথ চালু করার কথা বলা হয়েছে। এ জন্য ২৪টি জেটির উন্নয়ন, পরিকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি গঙ্গার দু’ধারের সৌন্দর্যায়ন করতে হবে। পরিবহণ দফতরের এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় জলপথ নির্মাণ ও গঙ্গার দূষণ রোধে নানাবিধ প্রকল্প হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। স্বামী বিবেকানন্দ পরিবহণ সার্কিট সেই প্রকল্পের মধ্যে চলে আসতে পারে।

বৈঠকে শহরের ট্রামের আধুনিকীকরণ, আরও বেশি সংখ্যায় নতুন বাস কেনার জন্য কেন্দ্রীয় সহায়তা চাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি, কোচবিহার বিমানবন্দর ফের চালু করা, দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের কথা মাথায় রেখে ১৬ আসনের বিমান ও হেলিকপ্টার পরিষেবা চালুর করার জন্যও কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন। বৈঠকে নিউটাউন থেকে সেক্টর-ফাইভ পর্যন্ত মনোরেল চালানোর প্রস্তাব করেছে নগরোন্নয়ন দফতর। প্রধানমন্ত্রী দেশে নতুন ১০০ আধুনিক শহর নির্মাণের যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার মধ্যে যাতে এ রাজ্যের দু-তিনটি শহর থাকে, তার প্রস্তাবও করা হয়েছে।

Advertisement

রাজ্য সরকার চায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের কাছে কেন্দ্রীয় সরকার একটি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ুক। এই প্রস্তাবে দিল্লি সম্মতি দিলে রাজ্য জমি দিতে রাজি। এ ছাড়া চুঁচুড়ায় একটি ধান গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করতেও কেন্দ্রীয় সহায়তা চাওয়ার কথা ভেবেছে রাজ্য।

১০০ দিনের কাজে বছরে অতিরিক্ত ২০০০ কোটি টাকা পেতে চায় রাজ্য। জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল প্রকল্পে আরও ৬০০০ কোটি টাকা চায়। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের টাকায় নতুন কয়েকটি হাসপাতাল তৈরির জন্য দিল্লির সাহায্য চায় স্বাস্থ্য দফতর। খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হলে যে ৫০০০ কোটি টাকার দায় চাপবে রাজ্যের ঘাড়ে, তার পুরোটাই কেন্দ্রের কাছে চায় নবান্ন। রাজ্যে গণবণ্টন ব্যবস্থার জন্য অতিরিক্ত খাদ্যশস্যেরও দাবি জানিয়েছে খাদ্য দফতর। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, রাজ্যের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ এই সব প্রস্তাবে কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য পেতে চান তাঁরা।

বৈঠক প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন,“এটা প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে কোনও কথা বলব না।” যদিও বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সচিব জানান, কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠ সমস্ত রাজ্যের কাছেই চিঠি পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলেন তাদের কোন কোন প্রকল্প বকেয়া রয়েছে বা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। সেই সূত্রেই এ দিনের বৈঠক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement