অঙ্কুর-কাণ্ডে শাস্তির দাবি, ফের বিক্ষোভ

আড়াই মাসের অঙ্কুর সীটের হাত বাদ যাওয়ার ঘটনায় শনিবারও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে আসানসোল জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখালেন আসানসোল গ্রামের প্রায় শতাধিক বাসিন্দা। বিক্ষোভে সামিল হন পড়ুয়ারাও। বিক্ষোভ শেষে স্মারকলিপি দেওয়া হয় হাসপাতাল সুপারকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৩৮
Share:

সুপারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

আড়াই মাসের অঙ্কুর সীটের হাত বাদ যাওয়ার ঘটনায় শনিবারও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে আসানসোল জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখালেন আসানসোল গ্রামের প্রায় শতাধিক বাসিন্দা। বিক্ষোভে সামিল হন পড়ুয়ারাও। বিক্ষোভ শেষে স্মারকলিপি দেওয়া হয় হাসপাতাল সুপারকে।

Advertisement

রানিগঞ্জের বল্লভপুরের বাসিন্দা, অস্থায়ী বাসকর্মী জয়ন্ত সীটের ছেলে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অঙ্কুরকে ২৬ জানুয়ারি এলাকারই একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। ওই দিনই তাকে পাঠানো হয় আসানসোল হাসপাতালে। ২৬ জানুয়ারি বিকেলে রক্ত নেওয়ার আগে হাতের শিরা ফোলানোর জন্য অঙ্কুরের ডান হাতে রবারের নল (টুর্নিকেট) বাঁধা হয়েছিল। রক্ত নেওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে তা খুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, টানা দু’দিন ধরে ওই শিশুর হাতে কষে সেই টুর্নিকেট বাঁধা ছিল। হাসপাতালের অত জন চিকিৎসক, নার্স কারও তা নজরে পড়েনি। চিকিৎসকেরা রাউন্ডে এসেও খেয়াল করেননি, শিশুর ডান হাত কালো হয়ে যাচ্ছে!

২৮ তারিখ বিষয়টি প্রথম নজরে আসে অঙ্কুরের পিসিমার। পরে অঙ্কুরের পিসেমশাই গোটা বিষয়টি কর্তব্যরত নার্সকে জানান। অভিযোগ, তাতেও হুঁশ ফেরেনি। কোনও রকম হেলদোল না দেখিয়ে এক চিকিৎসক পরিবারের লোকজনের হাতে একটা মলম ধরিয়ে দেন। পরে অঙ্কুরকে স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে শিশুটির কালো হয়ে যাওয়া ডান হাত কনুইয়ের নীচ থেকে অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হয়। চিকিৎসকেরা জানান, দু’দিন ধরে ওইটুকু হাতে শক্ত করে টুর্নিকেট বাঁধা থাকায় কনুইয়ের নীচে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গ্যাংগ্রিন হয়ে গিয়েছিল!

Advertisement

অঙ্কুরের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় যুব কংগ্রেস। শনিবার সকাল থেকেই পোস্টার, প্ল্যাকার্ড হাতে আসানসোল গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ জড়ো হন হাসপাতাল চত্বরে। তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে সুপারের ঘরের সামনে বসে পড়েন। দাবি ওঠে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে। সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ব্যবস্থা নিয়েছে।

শুক্রবার ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রিপোর্টে সুপারকে শো কজের পাশাপাশি পাঁচ জন চিকিৎসক ও নার্সের সাসপেনশনের সুপারিশ করা হয়েছে। ওই দিন স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ জেনে সোমবার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জেলা হাসপাতালে এসে ডাক্তার ও নার্সদের বিষয়ে খোঁজ-খবরও করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন