অন্য লগ্নি সংস্থাকে ছাড় কেন, জানতে চাইবে সিবিআই

কয়েক হাজার আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে বেশ কিছু দিন ধরে গড়িমসি করে যাচ্ছিল রাজ্যের বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থা। তবু পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন তখন কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন, সিবিআই তা-ও খতিয়ে দেখতে চায়। এ জন্য সারদা ছাড়া অভিযুক্ত অন্যান্য লগ্নিসংস্থার কর্ণধারদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে বুধবার সিবিআই-সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০২:৫৯
Share:

কয়েক হাজার আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে বেশ কিছু দিন ধরে গড়িমসি করে যাচ্ছিল রাজ্যের বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থা। তবু পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন তখন কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন, সিবিআই তা-ও খতিয়ে দেখতে চায়। এ জন্য সারদা ছাড়া অভিযুক্ত অন্যান্য লগ্নিসংস্থার কর্ণধারদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে বুধবার সিবিআই-সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সারদা-সহ বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থার আমানত নয়ছয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তে নেমেছে। গড়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সিবিআই-সূত্রের খবর, সারদা-সহ যে সব অর্থলগ্নি সংস্থা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিচ্ছে না, তাদের আর্থিক অবস্থা জানতে প্রয়োজনে আয়কর দফতরের সাহায্য নেওয়া হবে। সারদা গোষ্ঠী সংক্রান্ত তথ্যাদি হাতে পেতে কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ইতিমধ্যে আয়করের শরণাপন্ন হয়েছে। সিবিআই-সিটের তদন্তকারীরা এ দিন ভবানী ভবনে গিয়ে সিআইডি-আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রসঙ্গত, সারদা-তদন্তে রাজ্য সরকারের গড়া ‘সিট’-এর সদস্য ছিলেন সিআইডি-র এডিজি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ: পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, ত্রিপুরা ও বিহারের বেশ কয়েকটি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো তদন্ত করবে। এই প্রেক্ষাপটে সিবিআই-সূত্রের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে ২০১১-য় নতুন সরকার আসার পরে সারদা-সহ কয়েকটি লগ্নিসংস্থা রমরমিয়ে ব্যবসা চালিয়েছে। তারা যে কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় বিধি অমান্য করছে,আয়কর দফতর বিভিন্ন সময়ে রাজ্য সরকারকে তা জানিয়েওছিল। সিবিআই এখন জানতে চায়, সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার করলেও রাজ্য সরকার কেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অন্যান্য সংস্থার কর্ণধারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না? সিবিআই-সূত্রের আরও দাবি, সারদা-কাণ্ডের জেরে রাজ্য সরকার শ্যামল সেন কমিশন গড়েছে, যেখানে টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন প্রায় ১৮ লক্ষ আমানতকারী। এঁদের পাঁচ লক্ষ অন্য সংস্থাতেও টাকা ঢেলেছেন। তাঁদের আবেদনের ভিত্তিতেও রাজ্য সরকার অন্যান্য সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু রাজ্য সরকার তা করেনি। “সরকারের কি কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল?” প্রশ্ন এক সিবিআই অফিসারের।

Advertisement

সিবিআই যাচাই করবে, সারদা গোষ্ঠী রাজ্য প্রশাসনকে সরাসরি ব্যবহার করে বাজার থেকে টাকা তুলেছে কি না। বাজার থেকে কী ভাবে টাকা তোলা হয়েছে, এবং সেই টাকার কত অংশ শেষ অবধি সারদার হাতে পৌঁছেছে, তার একটা হিসেব সিবিআইকে দিয়েছে ইডি। তার ভিত্তিতে অন্য লগ্নিসংস্থার হিসেবপত্র পরীক্ষা করা হবে বলে সিবিআই-সূত্রের খবর। ইডি’র তদন্তকারীরা সিবিআই-কে জানিয়েছেন, সুদীপ্ত সেন জেরার মুখে হামেশাই বয়ান বদলেছেন। এর কারণও যুগ্ম ভাবে খতিয়ে দেখবে সিবিআই এবং ইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন