আগামী বছর থেকে স্নাতক স্তরে সব কলেজে অনলাইনে ছাত্র ভর্তি শুরু হবে বলে আগেই জানিয়েছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার এক ধাপ এগিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, অনলাইনে ছাত্র ভর্তি এবং নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিটি কলেজকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। এ দিন নবান্নে এই অনুদান ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী।
ব্রাত্য বসু শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন এ বছরই কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইন পদ্ধতিতে স্নাতকে ছাত্র ভর্তির ব্যবস্থা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে মে-র শেষে পার্থবাবু শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা রদ করা হয়। সেই সঙ্গে এ বছর অনলাইনে ছাত্র ভর্তি বাধ্যতামূলক নয় বলেও জানিয়ে দেন তিনি। অনলাইনে ভর্তির কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যাওয়ায় শিক্ষাজগতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তখন টাকা নিয়ে ভর্তি, নিয়ম ভেঙে পছন্দের পড়ুয়াদের কলেজে ঠাঁই দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ উঠছিল বিভিন্ন কলেজে। কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থায় এই ধরনের দুর্নীতি ঠেকানো সম্ভব বলে শিক্ষাজগতের অভিমত। কিন্তু চালু হওয়ার মুখেই সেই উদ্যোগ থামিয়ে দেওয়া হয়।
সেই সময়েই পার্থবাবু জানিয়ে দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় ভাবে না-হলেও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজ-ভিত্তিক অনলাইন ভর্তি চালু করা হবে বাধ্যতামূলক ভাবে। তারই সূত্র ধরে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন অনলাইন প্রকল্পে কলেজকে অনুদানের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “অনলাইনে ভর্তির পাশাপাশি কলেজে বাধ্যতামূলক ভাবে এনএসএস, এনসিসি শুরু করতে চায় সরকার। সব কলেজের ওয়েবসাইটে এনএসএস, এনসিসির সবিস্তার তথ্য রাখতে হবে।”
এ দিন নবান্নে কলকাতা, প্রেসিডেন্সি-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে এনএসএস এবং এনসিসি কর্মসূচি নিয়ে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি চান, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই দু’টি প্রকল্পে অংশগ্রহণ আবশ্যিক হোক। এ দিনের বৈঠকের পরে পার্থবাবু জানান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এনএসএস, এনসিসি ক্যাডারদের আরও বেশি করে ব্যবহার করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকেও এই সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এনএসএস বাধ্যতামূলক করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন পার্থবাবু। এনএসএস, এনসিসি-তে যোগ দিলে কিছু সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে পার্থবাবু জানান, রাজ্যে ৫০০টি স্কুলকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা হচ্ছে। সেই জন্য ২২০০ অতিরিক্ত শিক্ষক-পদ তৈরিরও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আদ্যাপীঠের অন্নদা বিদ্যামন্দিরকে আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্তও এ দিন গৃহীত হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার সমাধানে ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ রাজ্যের সাহায্য চেয়েছিলেন।