অভিষেকের উপরে হামলায় চাপানউতর পূর্বে

অভিষেক-নিগ্রহ কাণ্ডে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পালা! কেমন? সিপিএম-বিজেপির দাবি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই নন্দীগ্রামের জেলায় এমন নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতারা বিরোধীদের উপর দায় চাপিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে রবিবার দুপুরে প্রথমবার সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো তথা রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

চণ্ডীপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৯
Share:

তৃণমূলের হামলায় লন্ডভন্ড চণ্ডীপুর থানা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

অভিষেক-নিগ্রহ কাণ্ডে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পালা! কেমন? সিপিএম-বিজেপির দাবি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই নন্দীগ্রামের জেলায় এমন নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতারা বিরোধীদের উপর দায় চাপিয়েছেন।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরে রবিবার দুপুরে প্রথমবার সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো তথা রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম লাগোয়া চণ্ডীপুর ফুটবল ময়দানের প্রকাশ্যে জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেকের আক্রান্ত হওয়ায় জেলায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। এ দিন চণ্ডীপুর ও ভগবানপুর ১ ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ব্যানারে অভিষেকের সভার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য। সভায় ছিলেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি, রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, সমবায় মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, কোলাঘাটের বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী প্রমুখ। জেলায় এঁরা সকলেই তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী এবং সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী পরিবারের বিরোধী শিবিরের হিসেবে পরিচিত।

যদিও এ দিনের ঘটনা দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলশ্রতি নয় বলেই দাবি বিধায়ক অমিয়বাবুর। সভামঞ্চে অভিষেকের উপর আক্রমণের ঘটনায় বাধা দিতে গিয়েছিলেন অমিয়বাবু নিজেই। তাঁর কথায়, “দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক জেলায় প্রথমবার সভা করতে এসেছিলেন। ভিড়ে ঠাসা সভায় তাঁর বক্তব্য শুনতে সবাই যখন উন্মুখ ছিলেন। কিন্তু, অতর্কিত আক্রমণে সব বানচাল হয়ে গেল। এমন ঘটনার পিছনে গভীর চক্রান্ত রয়েছে। এই আক্রমণে বিরোধীদলের লোক জড়িত বলেই আমরা মনে করছি। আমরা চাই পুলিশ যথাযথ তদন্ত করে আক্রমণকারী ব্যক্তি সহ এই ঘটনায় জড়িত সব চক্রান্তকারীকে গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করুক।”

Advertisement

সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি অখিল গিরিও। তিনি শুধু বলেন, “অভিষেকের উপর আক্রমণের ঘটনা নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। দলীয়ভাবে রাজ্য নেতৃত্বও তদন্ত করছে।” এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। দলের যুব নেতার উপর হামলা প্রসঙ্গে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।” দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, “আমার রাজনৈতিক জীবনে জেলায় এ রকম ঘটনা ঘটেনি। নিন্দর ভাষা নেই। পরিকল্পনা করেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কারণ, এটা উপদ্রুত এলাকা নয়।” তিনিও পুলিশি তদন্তে আস্থা রাখছেন।

তৃণমূল নেতৃত্ব বিরোধীদের উপর দোষ চাপালেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা এমন ঘটনা সমর্থন করি না। দলের কর্মীরা ওদের সভায় কেন যাবে?’’ প্রশান্তবাবু তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দলীয় কোন্দলের জেরে অনেক গোলামালের ঘটনা দেখেছি। তবে এ ভাবে প্রকাশ্য জনসভায় দলীয় নেতৃত্বের উপর আক্রমণ দেখিনি। সমাজ বিরোধীদের প্রশয় ও উস্কানি দিলে তাঁরা তো এ ধরনের ঘটনা ঘটাতেই পারেন!” অভিষেকের উপর আক্রমণের নিন্দে করে দলের জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়েছে বিজেপিও। দলের জেলা সভাপতি তপন করও পুলিশি তদন্তে আস্থা রাখছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন