অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিতে মুম্বইয়ের এক মডেল তথা টেলি-সিরিয়াল প্রযোজককে শুক্রবার গ্রেফতার করল সিবিআই। নাম প্রীতি ভাটিয়া। ওড়িশার অর্থতত্ত্ব নামে একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে প্রীতির জড়িত থাকার অভিযোগ মিলেছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিতে ওড়িশায় ইতিমধ্যেই সে রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং প্রাক্তন বিধায়ক-সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের এক মুখপাত্র জানান, অর্থতত্ত্ব সংস্থার কাছ থেকে প্রীতি প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। এর মধ্যে কিছু টাকা তাঁর সংস্থার অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল। বাকি টাকা প্রীতির ব্যক্তিগত ও আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে। এই টাকা নেওয়ার উপযুক্ত কারণ প্রীতি দেখাতে পারেননি বলে সিবিআইয়ের দাবি। যদিও বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রীতি দাবি করেছিলেন, “কোনও অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত নই।”
সিবিআই সূত্রের খবর, এ রাজ্যে সারদার মতো ওড়িশায় অর্থতত্ত্ব নামে সংস্থাটিও বিরাট আকারে অর্থলগ্নির কারবার ফেঁদেছিল। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, এই সংস্থার মালিক প্রদীপ শেঠির সঙ্গে সে রাজ্যের প্রভাবশালী মহলেরও ঘনিষ্ঠতা ছিল। তদন্তে তার বেশ কিছু প্রমাণও মিলেছে। এই ঘটনায় সেপ্টেম্বর মাসেই ওড়িশার প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল অশোক মোহান্তি-সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। মুম্বইয়ের এক শেয়ার-দালালকেও পাকড়াও করা হয়েছিল। এ বার সেই তালিকায় জড়াল মুম্বইয়ের বিনোদন জগতের নামও।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, অর্থতত্ত্ব সংস্থার মালিক প্রদীপ শেঠি ওড়িয়া ও মুম্বইয়ের বিনোদন জগতে টাকা ঢালতে চেয়েছিলেন। সেই সূত্রেই প্রীতির সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলেন। প্রীতির মাধ্যমেই বিনোদন জগতে অর্থতত্ত্ব সংস্থার টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে এ কথা জানতে পেরে অগস্টে প্রীতির মুম্বইয়ের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। তল্লাশি চালিয়ে কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তার পর থেকে কয়েক দফায় প্রীতিকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। গোয়েন্দারা বৃহস্পতিবারও তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা নিয়ে সন্তোষজনক উত্তর না দিতে পারায় তাঁকে আটক করা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে প্রীতিকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।