সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ভিন্ রাজ্যেরও বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উঠেছে। তাঁদের মধ্যে অসমের গায়ক-চিত্রপরিচালক সদানন্দ গগৈ এবং ব্যবসায়ী রাজেশ বজাজ আবার পড়েছেন জেরার মুখে। সিবিআই সূত্রের খবর, রবিবার সকাল থেকেই সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরে ওই দু’জনকে জেরা করা হয়। তাতে কিছু তথ্যও মিলেছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
তদন্তকারীরা বলছেন, বৈদ্যুতিন চ্যানেল বিক্রি নিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহের সঙ্গে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের যে-চুক্তি হয়েছিল, তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রাজেশের নাম পাওয়া গিয়েছে। জেরায় সুদীপ্ত জানান, ওই চুক্তি বাবদ তিনি মাতঙ্গকে ২৮ কোটি টাকা দেন। সিবিআই সূত্রের খবর, চুক্তিটি বাতিল হয়ে যাওয়ায় তিনি রাজেশ মারফত ২৮ কোটি টাকা ফেরত পাঠিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন মাতঙ্গ। সেই টাকা সুদীপ্ত পেয়েছিলেন কি না, তা নিয়েই জেরা করা হচ্ছে রাজেশকে।
এ দিন সিবিআইয়ের দফতর থেকে বেরোনোর পরে রাজেশ অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তবে ওই ব্যবসায়ী আগেই বারবার দাবি করেছেন, চুক্তি সংক্রান্ত তথ্য তিনি বিধাননগর পুলিশকে দিয়েছেন। সিবিআই-কেও দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজেশ।
অসমের এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সদানন্দকেও একই কারণে জেরা করা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। অভিযোগ, ওই মন্ত্রীর সঙ্গে সুদীপ্তের বৈঠকে থাকতেন সদানন্দ। ওই গায়ক-চিত্রপরিচালক সারদার চার কোটি টাকা নিয়েছিলেন। তবে সদানন্দের দাবি, তিনি অসমে সারদার বিস্কুট কারখানার জন্য একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করছিলেন। সেই কাজের জন্যই চার কোটি টাকা নেন। এ ছাড়া সারদার সঙ্গে তাঁর আর কোনও রকম আর্থিক লেনদেন ছিল না।
এ রাজ্যেও মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠদের জেরা করার উপরে জোর দিচ্ছে সিবিআই। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্ত-সহায়ক রেজাউল করিম ওরফে বাপিকে দু’দিন জেরা করা হয়েছে। মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবীকেও ডাকা হতে পারে। তবে পরিবহণমন্ত্রীকে কবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, সেই ব্যাপারে মুখ খুলছে না সিবিআই।
বিরোধীরা কিন্তু শাসক দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেই চলেছেন। এ দিন বীরভূমের কীর্ণাহারে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “সিবিআইয়ের জেরা এড়াতে মন্ত্রীরা সব হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আশঙ্কা হচ্ছে, গোটা নবান্নটাই না এক দিন হাসপাতালে পরিণত হয়!”