কিশোর চন্দকে খুনের প্রতিবাদে আইনজীবীদের কর্মবিরতি। মঙ্গলবারের জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন। ছবি: সন্দীপ পাল
ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই আইনজীবী কিশোর চন্দকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার দিনভর তদন্তের পরে পুলিশের সেই সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে। রাজ্য বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাসও দাবি করেছেন, পুলিশের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন, জমি সংক্রান্ত বিবাদেই কিশোরবাবুকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ খুনিকে চিহ্নিতও করতে পেরেছে বলে গৌতমবাবু জানিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (জলপাইগুড়ি) সিএস লেপচা বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই খুন বলে মনে হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধী পালিয়েছে। তাকে ধরতে তল্লাশি চলছে।’’
সোমবার সকালে জলপাইগুড়িতে নিজের ফ্ল্যাটেই খুন হন কিশোরবাবু। তারপর মঙ্গলবার বার কাউন্সিল খুনের প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যের সব আদালতে কর্মবিরতি পালন করেছে। তাই বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ব্যক্তিগত বৈরির জন্যই কিশোরবাবু খুন হয়ে থাকেন, তা হলে কেন কর্মবিরতি করে এত লোককে দুর্ভোগে ফেলা হল? তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, মাত্র ৩ দিন আগে শিলিগুড়িতে বার কাউন্সিলের অনুষ্ঠানে খোদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরও আইনজীবীদের অনুরোধ করেছিলেন, তাঁরা যেন ঘনঘন কর্মবিরতি না করেন। কারণ, তাতে আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। বিচারপ্রার্থীরা দুর্ভোগে পড়েন। গৌতমবাবুর যুক্তি, ‘‘শোকের কারণেই কর্মবিরতি করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, একজন মক্কেলই কিশোরবাবুকে খুন করেছে। জমিজমা সংক্রান্ত লেনদেনের কারণেই খুন করা হয়েছে বলেও পুলিশের একাংশের দাবি। আশা করব, পুলিশ দ্রুত রহস্যের কিনারা করবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির আড়াই মাইল এলাকার বাস টার্মিনাস লাগোয়া দশ কাঠা জমি নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। ওই জমির মালিকানার দাবিদার একাধিক পরিবার। সন্দেহভাজনও এমনই একটি পরিবারের ছেলে। খুনের পরে কিশোরবাবুর মুহুরি বিবেক দে সরকার এক ব্যক্তিকে আইনজীবীর ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেছিলেন। সেই ব্যক্তিকে দেখেন কিশোরবাবুর গাড়ির চালক তারামোহন রায়ও। তাঁদের কাছ থেকে বর্ণনা শুনে সন্দেহভাজনের ছবিও আঁকানো হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থেই ওই ব্যক্তির নাম ও পরিচয় পুলিশ এখনও প্রকাশ করেনি।