আমেজের বর্ষণে কাঁটা হতে পারে নিম্নচাপের মর্জি

নিম্নচাপের গতিবিধিতে ফের পথ পরিবর্তনের সম্ভাবনা। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি-ভাগ্যও আবার মার খেতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি মায়ানমার উপকূলে এসে প্রচলিত অভিমুখ পাল্টে ফেলেছিল। শনিবার মুখ ঘুরিয়েছিল ওড়িশা উপকূলের দিকে। সোমবার তা ওড়িশার স্থলভূমিতে ঢুকে পড়েছে। আবহবিজ্ঞানীদের অনুমান, এ বার সেটি পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে রওনা হবে। এবং পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে সে আবার চেনা ছকের বাইরে হাঁটতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০৩:৪৯
Share:

বৃষ্টি দর্শন। গাড়ির ভিতর থেকে। রেড রোডে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নিম্নচাপের গতিবিধিতে ফের পথ পরিবর্তনের সম্ভাবনা। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি-ভাগ্যও আবার মার খেতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।

Advertisement

আন্দামান সাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি মায়ানমার উপকূলে এসে প্রচলিত অভিমুখ পাল্টে ফেলেছিল। শনিবার মুখ ঘুরিয়েছিল ওড়িশা উপকূলের দিকে। সোমবার তা ওড়িশার স্থলভূমিতে ঢুকে পড়েছে। আবহবিজ্ঞানীদের অনুমান, এ বার সেটি পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে রওনা হবে। এবং পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে সে আবার চেনা ছকের বাইরে হাঁটতে পারে। তাতে উত্তরবঙ্গের কপাল খুললেও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিতে টান ধরার সমূহ সম্ভাবনা। কী রকম?

আবহবিদদের ব্যাখ্যা: প্রচলিত পথ ধরলে বাংলার আকাশ থেকে নিম্নচাপের সরে যাওয়া উচিত পশ্চিমে, অর্থাৎ ছত্তীসগঢ়ের দিকে। কিন্তু বায়ুপ্রবাহের হেরফেরের দরুণ এ বার সে রকমটা হবেই, তার নিশ্চয়তা নেই। বরং ছত্তীসগঢ়ের পথ ভুলে সেটি উত্তর-পূর্বে মুখ ঘোরাতে পারে, উত্তরবঙ্গ হয়ে পাড়ি দিতে পারে অসমের দিকে। সে ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টি শুরু হবে। উপরন্তু নিম্নচাপ উত্তরবঙ্গ ছাড়িয়ে উত্তর-পূর্বে পা রাখলে সেখানকার আবহ-পরিস্থিতি বর্ষা আগমনের অনুকূল হয়ে উঠবে। তা তখন মায়ানমার দিয়ে ঢোকা মৌসুমি বায়ুর শাখাটিকে টেনে আনবে নিজের দিকে। যত তাড়াতাড়ি নিম্নচাপ উত্তরবঙ্গ হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ঢুকবে, উত্তর-পূর্বে দ্রুত বর্ষা আসার সম্ভাবনা তত বাড়বে। অন্য দিকে হিতে বিপরীত হবে দক্ষিণবঙ্গে। নিম্নচাপ গতি বাড়িয়ে উত্তরবঙ্গে ঢুকলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি ক্রমশ কমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহবিদেরা।

Advertisement

তবে ফের মতিবদল হোক না হোক, এক বার পথ পাল্টানো নিম্নচাপের দৌলতে আপাতত স্বস্তি ফিরেছে দহনক্লান্ত দক্ষিণবঙ্গে। তাপপ্রবাহ শনিবারই বিদায় নিয়েছিল। রবিবার থেকে দফায় দফায় বৃষ্টির ফলে তাপমাত্রা হুড়মুড়িয়ে নেমে গিয়েছে। সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত চব্বিশ ঘণ্টায় কলকাতা ও আশপাশে ১২.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরিমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢোকায় দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে তৈরি হয়েছে বজ্রগর্ভ মেঘ, যা এ দিন ভরদুপুরে শহরে মুষলধারে বৃষ্টি নামিয়েছে। বর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে মেঘের আওয়াজও মালুম হয়েছে। এ দিন বিকেলের উপগ্রহ-চিত্রে দেখা গিয়েছে, অন্ধ্র-ওড়িশা-দক্ষিণবঙ্গের উপরে ঘন মেঘের আস্তরণ।

আজ, মঙ্গলবারেও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এ হেন ‘মনোরম’ আবহাওয়ার মেয়াদ ক’দিন? আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, তা নির্ভর করছে নিম্নচাপের চলন-বলনের উপরে। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের কথায়, “নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে কী করবে, তার উপরেই আগামী দু’দিনের আবহাওয়া নির্ভর করছে। নিম্নচাপ প্রচলিত পথে গেলে গোটা দক্ষিণবঙ্গ মঙ্গল ও বুধবার বৃষ্টি পাবে। অভিমুখ পাল্টালে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমে আসবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন