চাষের দিশা

ইচ্ছে-খুশি নয়, চাপান সার দিন মেপে-বুঝে

নানা মরসুমি সব্জির সঙ্গে কিছুটা আগাম ও অসময়ের সব্জি চাষ হল বেশি আয়ের চাবিকাঠি। কিন্তু অনেক সময়ই চাষিরা বেশি আয় করার লোভে সব্জি গাছে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সার দিয়ে বেশি ফলন পেতে চান। বিশেষ করে মূল সারের পর চাপান সার হিসাবে ইচ্ছে খুশি সার প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে যেমন অপচয় হয়, উৎপাদন খরচ বাড়ে, তেমনই মাত্রাতিরিক্ত সার জমিতে আবদ্ধ হয়ে মাটির স্বাস্থ্য খারাপ করে। ক্ষতি হয় সব দিকে।

Advertisement

শুভদীপ নাথ

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

নানা মরসুমি সব্জির সঙ্গে কিছুটা আগাম ও অসময়ের সব্জি চাষ হল বেশি আয়ের চাবিকাঠি। কিন্তু অনেক সময়ই চাষিরা বেশি আয় করার লোভে সব্জি গাছে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সার দিয়ে বেশি ফলন পেতে চান। বিশেষ করে মূল সারের পর চাপান সার হিসাবে ইচ্ছে খুশি সার প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে যেমন অপচয় হয়, উৎপাদন খরচ বাড়ে, তেমনই মাত্রাতিরিক্ত সার জমিতে আবদ্ধ হয়ে মাটির স্বাস্থ্য খারাপ করে। ক্ষতি হয় সব দিকে।

• কখন চাপান সার
সাধারণত বেশিরভাগ সব্জির ক্ষেত্রে ২৫-৩০ দিনে বা মাসখানেকে এক বার ও ৪৫-৫০ দিনে বা মাসদু’য়েকে আর এক বার চাপান সারের নিয়ম। তবে, বেগুন, পটল, লঙ্কার মতো দীর্ঘমেয়াদী ফলদায়ী সব্জিতে চাষিরা পরেও চাপান দেন।

• সার দিন গাছে
চাষিরা নিজেদের প্রশ্ন করুন—সার দেন কার জন্য, মাটি না গাছের? উত্তরটা অবশ্যই গাছের বাড়বৃদ্ধির জন্য। বীজ বোনার আগে মাটিতে আগাম সার দিলে বাচ্চা প্রথম খেয়ে শিকড় বাড়িয়ে ডালপালা ছাড়ে। তবে, এরপর মাটিতে না দিয়ে জলে গোলা নানা ফর্মুলেশনের মিশ্র সার সরাসরি পাতায় স্প্রে করুন। এতে— ১) গাছ চট করে তৈরি খাবার সরাসরি পাতা দিয়ে পাবে। ২) মাটির স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। ৩) সারের খরচ কমবে ৪) প্রয়োগ সহজ বলে শ্রম কম।

Advertisement

• জলে গোলা সার

Advertisement

রাসায়নিক ১০০ % জলে গোলা সার হিসাবে বাজারে ইফকো’র (এন:পি:কে) ১৮:১৮:১৮, ১৭:৪৪:০ ও ০:০:৫০ আর নানা কোম্পানির ১৯:১৯:১৯ সার পাওয়া যায়। যা চাপানে ৮-১০ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে প্রয়োগ করা যেতে পারে সব্জির রকমফেরে। দীর্ঘমেয়াদী বেগুন, লঙ্কা ও পটলে ফলন তুলে মাসে এক বার দিলে খুবই ভাল ফলাফলের সম্ভাবনা।

• গোলা জৈব সার

বেশ কিছু কোম্পানি এখন ১০০% জৈব ফর্মুলেশনে এন:পি:কে-র ১৯:১৯:১৯ আবার ১.০: ২.৬: ২.৬ ও ১.৮: ৪.৬:০ ও ০:০: ৫.০ (বাজারে প্রাইম প্যাক, ন্যানো এনপিকে ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়) নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে চাপানে ১.০: ২.৬: ২.৬ ফর্মুলেশন ৫ মিলি প্রতি লিটার জলে ১-২ মিলি হিউমিক অ্যাসিডের সঙ্গে মিশিয়ে চাপান দিলে খুবই ভাল ফল পাওয়া যাবে। বিশেষ করে অণুসেচ বা ড্রিপ ব্যবস্থায় ফলন, গুণমান বাড়বে।

গাছ পাবে সার। বাঁচবে মাটি, আর চাষির লাভ।

লেখক সহ-উদ্যান পালন অধিকর্তা,
মুর্শিদাবাদ ও রাজ্য সব্জি বিশেষজ্ঞ, কিসান কল সেন্টার

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement