ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সংখ্যালঘু সংরক্ষণ রাজ্যে

পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোয় চলতি বছর থেকে ৫০% আসন সংরক্ষিত থাকবে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য। জয়েন্ট এন্ট্রান্স নয়, ওই সব আসনে পড়ুয়া ভর্তি হবে আলাদা প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে।

Advertisement

সাবেরী প্রামাণিক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৪ ০৪:১০
Share:

পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোয় চলতি বছর থেকে ৫০% আসন সংরক্ষিত থাকবে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য। জয়েন্ট এন্ট্রান্স নয়, ওই সব আসনে পড়ুয়া ভর্তি হবে আলাদা প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে। তার বন্দোবস্ত করবে রাজ্যে সংখ্যালঘু পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব মাইনরিটি প্রফেশনাল অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউটস’ (আমপাই)।

Advertisement

এ ব্যাপারে ৭ মার্চ রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। দফতরের খবর: এ বছরের প্রবেশিকাটি নেওয়া হবে ৩ মে। তার মারফত ফার্মাসি-তেও পড়ুয়াভর্তি হবে। কলেজগুলোয় অসংরক্ষিত বাকি ৫০% আসনে অবশ্য পড়ুয়া নেওয়া হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সাফল্য-তালিকা থেকে। নতুন নিয়মে পশ্চিমবঙ্গে সব মিলিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে আপাতত হাজারের কিছু বেশি। যে প্রতিষ্ঠান যে ধর্ম-সম্প্রদায় পরিচালিত, সেখানে সেই ধর্ম-সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারাই সংরক্ষিত আসনে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। তার পরেও সংরক্ষিত আসন খালি থাকলে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়ের সুযোগ মিলবে। তাতেও সংরক্ষিত কোটা পূরণ না-হলে জয়েন্ট-

তালিকার সাধারণ শ্রেণির (জেনারেল ক্যাটেগরি) পড়ুয়ারা ভর্তি হতে পারবেন। কী ভাবে?

Advertisement

রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সংখ্যালঘু পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পৃথক প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তির প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে জয়েন্টের কাউন্সেলিং শুরুর আগে। তার পরেও কত আসন খালি থেকে গেল, কলেজ-কর্তৃপক্ষের তরফে সে তথ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের কাছে পেশ করতে হবে। খালি আসনগুলোকে তখন অসংরক্ষিত আসনে পরিবর্তিত করে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সেখানে পড়ুয়া পাঠাবে বোর্ড।

উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর: জয়েন্ট এন্ট্রান্সের তালিকায় ধর্মভিত্তিক সংরক্ষণের নিয়ম নেই। ধর্মীয় সংখ্যালঘু প্রার্থীদের বাছাই করে সংখ্যালঘু পরিচালিত কলেজে পাঠানো জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় আমপাই প্রস্তাব দিয়েছিল, প্রতিষ্ঠানগুলিতে সংখ্যালঘুদের জন্য আসন সংরক্ষণ করে স্বতন্ত্র ভর্তি-পরীক্ষা নেওয়া হোক। সংবিধানের ৩০ ধারা অনুযায়ী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়টি মাথায় রেখে রাজ্য সরকার তাতে সম্মতি দিয়েছে। যদিও উচ্চশিক্ষা দফতর জানিয়েছে, নয়া প্রবেশিকার পদ্ধতি, মান, ভর্তির স্বচ্ছতা ইত্যাদিতে সরকার নজর রাখবে। এ জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি গড়া হয়েছে, যার মাথায় রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রদীপ্ত রায়। আমপাইয়ের দাবি, মানের নিরিখে তাদের প্রবেশিকা হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সমতুল।

কিন্তু হঠাৎ এ হেন উদ্যোগের কারণ? আমপাইয়ের তরফে তরণজিৎ সিংহ বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে কর্নাটক-তামিলনাডু-অন্ধ্রপ্রদেশ-উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে পৃথক প্রবেশিকা মারফত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হচ্ছে। আমরাও বেশ কিছু দিন যাবৎ পশ্চিমবঙ্গে ব্যবস্থাটি চালু করার প্রস্তাব দিচ্ছিলাম। সরকার এখন সায় দিয়েছে।”

পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে সংখ্যালঘু পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পাঁচটি। এর চারটে শিখ সম্প্রদায় পরিচালিত গুরু নানক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, নারুলা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, জেআইএস কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গুরু নানক ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি। একটা কলেজ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পরিচালিত। তার নাম সেন্ট মেরিজ টেকনিক্যাল ক্যাম্পাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন