ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এক-কর্তা গ্রেফতার হয়েছেন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ক্লাবের তিনটি অ্যাকাউন্টে থাকা ১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা ‘অ্যাটাচ’ করে দিয়েছে। ফলে ঘোর সঙ্কট। অন্য দিকে চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের অন্যতম শীর্ষ কর্তাকে ডেকে জেরা করলেও তাদের কেউ গ্রেফতার হননি। ইডি তাদের একটি মাত্র অ্যাকাউন্ট ‘অ্যাটাচ’ করলেও তাতে রয়েছে তুলনায় অনেক কম, ৩২ লক্ষ টাকা। বাকি অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা ব্যবহার করাই যায়। এই অবস্থায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ইডি-কে তোপ দাগলেও মোহনবাগান কর্তারা কিন্তু চুপ থাকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইডি ক্লাবের তিনটি অ্যাকাউন্ট ‘অ্যাটাচ’ করার পরে বৃহস্পতিবারই ক্লাব তাঁবুতে বৈঠকে বসে ইস্টবেঙ্গলের কোর কমিটি। সেই বৈঠকের পরেই ক্লাবসচিব কল্যাণ মজুমদার বৃহস্পতিবার ইডির বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে তোপ দেগেছেন। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “স্পনসর হিসাবে সারদা তিন বছরে চার কোটি আট লাখ টাকা দিয়েছিল। আমরা ক্লাব থেকে খরচ করেছি আরও আট কোটি টাকা। সেটা সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া। সেই টাকা আটকানোর ক্ষমতা ইডিকে কে দিয়েছে?” জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে কর্তারা পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেখানে ঠিক হয়েছে, ইডির চিঠি পেলে আদালতে যাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হোক।
মোহনবাগান কিন্তু এ সবের ধার দিয়েও যায়নি। বাগান কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ভুটানে কিংস কাপ খেলার জন্য দল পাঠানো হবে। নির্ধারিত দিনে অনুশীলনও শুরু করে দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু এই অবস্থায় দুই বড় ক্লাব জোট বাঁধলে কি ভাল হতো না? মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র সে পথে না হেঁটে বরং নাম না করে ইস্টবেঙ্গলকে কটাক্ষ করে বলেন, “অন্য কোনও ক্লাবের সঙ্গে আমাদের মিলিয়ে ফেলবেন না। আমারা স্পনসর হিসাবে সারদার থেকে যে টাকা পেয়েছি, তা অন্য কোনও খাতে ব্যয় করা হয়নি। ফুটবলারদের মাইনে, অনুশীলনের খরচেই ব্যবহার করা হয়েছে।” সূত্রের খবর, মোহনবাগান কর্তারা আশ্বাস পেয়েছেন, তাঁদের অ্যাকাউন্টে থাকা যে ৩২ লক্ষ টাকা ‘অ্যাটাচ’ হয়েছে, তা তারা ফেরৎ পেয়ে যাবেন। তবে সে ব্যাপারে সরকারি ভাবে কেউ মুখ খুলতে নারাজ।
ইস্টবেঙ্গল অ্যাকাউন্ট ‘অ্যাটাচ’-এর বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আইএফএ এবং সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে। ইতিমধ্যেই রটে যায়, ইস্টবেঙ্গলের ক্রিকেট সচিব সদানন্দ মুখোপাধ্যায় পদত্যাগ করেছেন। সদানন্দবাবু অবশ্য সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু বলেন, “আমার কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার কথা জানিয়েছি। এর বেশি কিছু বলব না।” সচিব কল্যাণবাবু পুরো ব্যাপারটা উড়িয়ে দিয়েছেন। সূত্রের খবর, সরকারি কর্মী সদানন্দবাবু পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন অফিসের কথা ভেবে। সিবিআই, ইডি যে ভাবে ক্লাবকর্তাদের ডাকছে, তাতে তাঁর অফিসে সমস্যা হতে পারে ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।