বিনিয়োগের ব্যাপারে রাজ্য সরকার আদৌ তৎপর নয়। বিরোধীদেরই বরং বিদেশি অতিথিদের বলতে হচ্ছে, ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁরা যেন পরিকল্পনা একেবারে ত্যাগ না করেন! ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে বুধবার এমনই দাবি করলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ।
বিজেপি-র দফতরে গিয়ে এ দিন সকালে রাহুলবাবুর সঙ্গে দেখা করেছেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রাঁসোয়া রিশ্যে। কলকাতায় এসে মঙ্গলবারই তিনি নবান্নে গিয়ে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে। হলদিয়া থেকে ভারত ও ফ্রান্সের একটি যৌথ উদ্যোগ সরিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ শিল্পমন্ত্রীর কাছে উত্থাপন করেছিলেন রাষ্ট্রদূত। তাঁর বক্তব্য ছিল, হলদিয়ার ঘটনা বিনিয়োগ সম্পর্কে ভাল বার্তা দেয় না। তার পর দিনই ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার সময় রাহুলবাবু তাঁকে আর্জি জানিয়েছেন, শিল্প-সহ রাজ্যের অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিকল্পনা এখনই বাস্তবায়িত না হতে পারে। কিন্তু এর পরে অন্য সরকার এসে অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব দেখাতে পারে। তাই এখনই যেন ফরাসিরা তাঁদের উৎসাহ হারিয়ে না ফেলেন। দেশের অন্য তিন মেট্রো শহরে ইন্দো-ফরাসি চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-র শাখা থাকলেও কলকাতায় নেই। এই শহরেও ওই বণিকসভার শাখা খোলার জন্য আবেদন জানিয়েছেন রাহুলবাবু। রিশ্যে আবার রাহুলবাবুকে পাল্টা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য। বিজেপি সভাপতি বলেছেন, এখন যেতে না পারলেও ফরাসি আমন্ত্রণ তিনি স্বীকার করছেন।
কলকাতায় এসে আর অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে যাননি ফরাসি রাষ্ট্রদূত। স্বভাবতই এই সাক্ষাৎকে বিজেপি-র উত্থানের ‘স্বীকৃতি’ হিসাবে দেখছেন রাহুলবাবুরা। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে রাহুলবাবুর সঙ্গে ছিলেন দলের দফতর সচিব অলক গুহরায়।
রাহুলবাবুর দাবি, এক সময়ের ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য কিছু প্রস্তাব রাজ্য সরকারকে দিয়েছিলেন ফরাসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরকার ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। রাহুলবাবুর মন্তব্য, “যারা কলকাতাকে লন্ডন, উত্তরবঙ্গকে সুইৎজারল্যান্ড করার কথা বলে, তারাই আবার প্রস্তাব এলে বুঝতেই পারে না!” পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য বলেছেন, “ফরাসিদের দিক থেকে সরকারের কাছে এমন কোনও প্রস্তাবের কথা জানা নেই।”