এজলাস বয়কট নিয়ে সভা ভেস্তে গেল বিতণ্ডায়

কীসের ভিত্তিতে তাঁর এজলাস বয়কট করা হচ্ছে এবং ক’জন কৌঁসুলি এর পিছনে আছেন, তার তথ্য তলব করেছেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত। সেই তথ্য পেশের আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে গিয়েই বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন বয়কটে নামা আইনজীবীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৮
Share:

কীসের ভিত্তিতে তাঁর এজলাস বয়কট করা হচ্ছে এবং ক’জন কৌঁসুলি এর পিছনে আছেন, তার তথ্য তলব করেছেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত। সেই তথ্য পেশের আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে গিয়েই বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন বয়কটে নামা আইনজীবীরা। এবং মঙ্গলবার সেই বাগ্‌বিতণ্ডা এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, বয়কট নিয়ে আইনজীবী সংগঠনের বৈঠকই শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেল।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার ওই তথ্য পেশের সঙ্গে সঙ্গে বয়কটের সমর্থনে আইনজীবী সংগঠনের তরফে কী ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, সেই দিকে তাকিয়ে আছে আদালত পাড়া। তথ্য ও ব্যাখ্যা পেয়ে আদালত কী অবস্থান হয়, তা নিয়েও কৌতূহল তুঙ্গে।

বিচারপতি গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চের উপর থেকে বয়কট প্রত্যাহার করা হবে, নাকি তা চলতেই থাকবে— কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী সংগঠন সেই বিষয়ে এ দিন জরুরি ভিত্তিতে সাধারণ সভার বৈঠক ডেকেছিল। সংগঠন সূত্রের খবর, বয়কটপন্থী এক দল আইনজীবীর তুমুল হইচইয়ে সেই বৈঠক মাঝপথে ভেস্তে যায়। সভাকক্ষ ছেড়ে চলে যান সংগঠনের সভাপতি ও সহ-সভাপতি। সংগঠনের এক নেতার অভিযোগ, ওই অবস্থায় সম্পাদককে কার্যত আটকে রেখে সভা মুলতুবি রাখার প্রস্তাব গ্রহণের জন্য চাপ দেন বয়কটপন্থীরা। শেষে সভা মুলতুবি ঘোষণা করে নিষ্কৃতি পান সংগঠনের সম্পাদক।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার বিচারপতি গুপ্তের আদালতে বয়কটের আইনি বৈধতার ব্যাখ্যা দিতে হবে হাইকোর্টের আইনজীবীদের তিনটি সংগঠনকে। কারণ, আন্দোলনে নাম কৌঁসুলিদের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি তথ্য পেশের নির্দেশের উপরে যে-স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আজ তার সময়সীমা শেষ হয়ে যাচ্ছে। আইনজীবী সংগঠন সূত্রের খবর, তাদের প্রতিনিধিদের ব্যাখ্যা শুনেই বিচারপতি গুপ্ত বয়কটের ব্যাপারে পরবর্তী নির্দেশ জারি করবেন।

এক প্রবীণ আইনজীবীর সঙ্গে বিচারপতি গুপ্ত যথাযথ ব্যবহার করেননি বলে অভিযোগ তুলে কিছু কৌঁসুলি ২২ জুলাই থেকে তাঁর এজলাস বয়কট করে চলেছেন। তার মধ্যেও যে-সব আইনজীবী এবং তদন্তকারী ওই এজলাসে যেতে চান, বয়কটকারীরা তাঁদের বাধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ। তাতেই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে এবং বিচারপতি গুপ্ত কড়া মনোভাব নেন। তিনি জানিয়ে দেন, কেস ডায়েরি (যার ভিত্তিতে মামলার কাজ চলে) আদালতের সম্পত্তি। আইনজীবীরা তা আটকে রাখতে পারেন না। কেস ডায়েরি আদালতেই রাখার জন্য পাবলিক প্রসিকিউটরকে নির্দেশ দেন বিচারপতি। বলেন, বিভিন্ন মামলার তদন্তকারীরা যাতে আদালতে হাজির থাকতে পারেন, তারও ব্যবস্থা করতে হবে।

এত কাণ্ডের পরে হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা এ দিন দাবি করেন, বিচারপতি গুপ্তের আদালত বয়কটের কোনও সিদ্ধান্ত সংগঠনের সভায় গৃহীত হয়নি। ২২ জুলাইয়ের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ওই ডিভিশন বেঞ্চে মামলায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন আইনজীবীরা। আজ ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় বিচারপতি গুপ্তকে সেই কথাও জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন