জাতীয় সড়কের বাইপাসের জন্য অধিগৃহীত জমির ক্ষতিপূরণের দাবিতে এক তৃণমূল নেতা আন্দোলনে নামায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। আলতামাস চৌধুরী নামে ওই নেতা রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগারমন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীর ভাইপো। মন্ত্রীর বক্তব্য, “আলতামাস আমার ভাইপো ঠিকই, তবে কার কথায়, কেন আন্দোলন করছে তা জানি না।” তাঁর কথায়, “সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্যই ওই বাইপাস তৈরি হচ্ছে। তার জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল বাম আমলেই। এখন ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধির দাবিতে দলের তরফে সেখানে কোনও আন্দোলন করা হচ্ছে না।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ইসলামপুরের অলিগঞ্জ থেকে শ্রীকৃষ্ণপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার বাইপাসটি তৈরির জন্য স্থানীয় শতাধিক জমিদাতার কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ইসলামপুর ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক বাইপাস কৃষি জমি রক্ষা কমিটির নামে ওই জমি মালিকেরা আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের দাবি, ২০০৪ সালের হিসাবে প্রতি একর পিছু আড়াই থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা ঠিক হচ্ছে না। তাই ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করা হচ্ছে। রবিবার ওই কমিটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভও করা হয়। স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূলকর্মীকেও মিছিলে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। এই কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আলতামাস চৌধুরী আইএনটিটিইউসি-র জেলা কমিটির সহ-সভাপতি।
তবে এই আন্দোলনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেছেন আলতামাসবাবু। তিনি বলেন, “এই আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক রঙ নেই। তাই আমিও আছি।” তাঁর কথায়, “আমাদের দাবি, একর পিছু জমির জন্য কম পক্ষে ৩৩-৫০ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। জমিদাতাদের সার্টিফিকেট ও চাকরির ব্যবস্থাও করতে হবে।”
এই আন্দোলনের সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন দলের ইসলামপুরের ব্লক সভাপতি তথা মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীর ছেলে মেহেতাব চৌধুরীও। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের দল জড়িত নয়। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে আন্দোলন করতেই পারেন। তবে জেলা নেতৃত্ব কিছু জানে না।” তিনি জানান, বাইপাসের জন্য অধিগৃহীত জমির দর নিয়ে দ্রুত প্রশাসনিক বৈঠকও হবে।
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, “জমিরক্ষা কমিটির দাবিপত্র পেয়েছি। বাইপাসের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অনেক জমি মালিক টাকা নিয়েও নিয়েছেন। তবে যাঁরা এখন আপত্তি করেছেন, তাঁরা আবেদন করতে পারেন। কিছু দিনের মধ্যে ফের বৈঠকও হবে।”