রাজ্যের ক্যালেন্ডারে নতুন দিবস। পোশাকি নাম, ‘কন্যাশ্রী দিবস’। ১৪ অগস্ট রাজ্যে পালিত হবে দিনটি। শুক্রবার ফেসবুকে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই প্রকল্পটি পুরোপুরি মমতার নিজের পরিকল্পনা। এবং তাঁর ‘স্বপ্নের প্রকল্প’। নাবালিকা বিবাহ, শিশুশ্রম, শিশুপাচার, নানা সামাজিক অপরাধ থেকে মেয়েদের বাঁচাতে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের পাঠাতে হবে স্কুলেএই উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। প্রকল্পের ‘লোগো’-ও মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা।
ঘটনাচক্রে মমতার পছন্দের সেই প্রকল্পের কথা বুঝিয়েই এ বার দুই নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। ঘটনাটি পুরুলিয়ার বলরামপুরের। শুক্রবার এই ব্লকের বেড়াডি ও দেউলি গ্রামের দুই ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। খবর পেয়ে ব্লক প্রশাসন দু’টি পরিবারকে প্রকল্পের সুফল বোঝান। পাশাপাশি, ১৮ বছরের নীচে মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনসম্মত নয় বলেও বোঝানো হয়। দুই পরিবারই মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেওয়া হবে না বলে প্রশাসনকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বলরামপুরের বিডিও সুচেতনা দাস জানান, বেড়াডি গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্রীটির বিয়ের খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবারও গ্রামে প্রশাসনের লোক গেলেও ওই পরিবারের দেখা মেলেনি। শুক্রবার ফের যাওয়া হয়। দঁড়দা গ্রামের মেয়েটি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। শুক্রবার তার বাড়ির লোকের সঙ্গেও কথা বলেন প্রশাসনের কর্মীরা। বিডিও-র কথায়, “কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে বেআইনি এবং এর ফলে মেয়ের ক্ষতি হতে পারে, এ কথা পরিবারকে বলা হয়। শিক্ষা দফতরের এক কর্মী দুই পরিবারকেই কন্যাশ্রীর সুবিধা বোঝান। লেখাপড়া করলে মেয়েরা সুবিধে পাবে, তা-ও জানানো হয়। এর পরে তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরেন।” যুক্তিবাদী সমিতির বলরামপুরের কর্মী দীপক মহান্তি বলেন, “আমরাও ওই দুই পরিবারকে বুঝিয়েছি, উপযুক্ত বয়সের আগে বিয়ে দেওয়া কেন অনুচিত।”
মুখ্যমন্ত্রী ফেসবুকে এ দিন ঘোষণা করেছেন, ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এ বছর লন্ডনে ‘গার্ল সামিট’-এর জন্য ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক দফতর ও ইউনিসেফ কন্যাশ্রী প্রকল্প উপস্থাপনার জন্য বেছে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “খুবই গর্বের এবং স্বীকৃতিও। আমরা কন্যা শিশুদের নিয়ে গর্বিত। তাদের সার্বিক উন্নয়ন আমাদের প্রাথমিক গুরুত্ব।”