শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোর খাটানো এবং অশান্তি তৈরির চেষ্টার অভিযোগের তালিকায় এ বার উঠে এল রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর নাম। অভিযোগ, কার্যত জোর করে প্রবীণ শিক্ষাবিদ সন্তোষ চক্রবর্তীকে সরিয়ে মালদহ কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি হয়ে বসেছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। যদিও মন্ত্রী নিজে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
শনিবার কৃষ্ণেন্দুবাবু মালদহ কলেজের পরিচালন সমিতির সভায় সভাপতি নির্বাচিত হন। তার কয়েক ঘণ্টা আগে পর পর সমিতির সদস্য চার শিক্ষকের পদত্যাগকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পর্যটনমন্ত্রী কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোনীত হতে চলেছেন, এ কথা জানার পরেই সভার কয়েক ঘণ্টা আগে একযোগে কলেজের তিন জন সদস্য পদত্যাগ করেন। আর এক শিক্ষক সভা শুরুর ঠিক আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে এসএমএস করে তাঁর পদত্যাগ করার কথা জানিয়ে দেন। যদিও এঁরা কেউই পদত্যাগের কোনও কারণ উল্লেখ করেননি। তবে মালদহের শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি, কৃষ্ণেন্দুবাবু সভাপতি মনোনীত হতে চলেছেন জানার পরেই ওই সদস্যরা পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি, কলেজে ইতিমধ্যেই নিজের প্রভাব খাটিয়ে যা খুশি তাই করছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করা হচ্ছে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী। মন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গত করছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অসীমকুমার সরকার।
রাজ্যের পালাবদলের পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শাসক দলের নেতাদের এমন চড়াও হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। কখনও পরিচালন সমিতির নেতা নির্বাচন, কখনও অধ্যাপকদের বা ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ। প্রত্যেকটি ঘটনাতেই অভিযোগ শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
তবে কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাবি, “সব অভিযোগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওঁরা পদত্যাগ করার কোনও কারণই তো লেখেননি। আমি জোর করে মালদহ কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হইনি।” শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, “কৃষ্ণেন্দুবাবু আমাকে জানিয়েছেন, সন্তোষ চক্রবর্তী পদত্যাগ করার পরে তিনি সভাপতি হয়েছেন। তবে অভিযোগ যখন হয়েছে তখন আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলব। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকেও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে বলব।”
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অসীমকুমার সরকার বলেন, “গত তিন বছর তিন মাসে সমিতির কেউই লিখিত ভাবে কোনও অভিযোগ করেননি। যে সমস্ত শিক্ষক এই অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা চান না কলেজের উন্নতি হোক।”