কাটোয়া আদালতে তোলা হচ্ছে ডাবলু আনসারিকে। অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি আলাদা জায়গা থেকে ডাবলু আনসারিকে গ্রেফতার করা হল কী করে, পুলিশকে আদালতে হাজির হয়ে তা জানানোর নির্দেশ দিলেন বিচারক। বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এক সময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা ডাবলু আনসারিকে সোমবার কাটোয়া আদালতে তোলা হলে এসিজেএম সৌমেন সরকার এই নির্দেশ দেন। ডাবলুকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলকোটে সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত উপপ্রধান ডাবলু দীর্ঘ দিন এলাকাছাড়া ছিলেন। সম্প্রতি তিনি বিজেপি-তে যোগ দিতে চান। তার পরেই রবিবার ডাবলুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর মঙ্গলকোটের বাড়ি থেকে কিছু অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে।
জামিনের আবেদনের শুনানিতে ডাবলুর আইনজীবীরা এ দিন জানান, রবিবার ভোরে মুর্শিদাবাদের কান্দি থেকে তাঁদের মক্কেলকে ধরা হয়েছে বলে গ্রেফতারির নথিতে দেখিয়েছে পুলিশ। কাটোয়ার পিন্ডিরা গ্রামের এক কংগ্রেস সমর্থককে খুন ও মঙ্গলকোটের পিন্ডিরায় বোমাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু এ দিন তদন্তকারী অফিসার মহম্মদ সফিউদ্দিন আদালতে লিখিত ভাবে জানান, রবিবার দুপুরে মঙ্গলকোটের টালিপাড়ায় ডাবলুর বাড়ি থেকে অস্ত্রশস্ত্র মিলেছে। তার ভিত্তিতে ডাবলুকে গ্রেফতার করে অস্ত্র আইনে মামলা শুরু হয়েছে।
আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন এক ব্যক্তি ফের গ্রেফতার হন কী ভাবে? ডাবলুর অন্যতম আইনজীবী রবিশঙ্কর দাসের দাবি, “পরিকল্পনা করে যে ডাবলুকে ফাঁসানো হয়েছে, তা পুলিশের নথি থেকে স্পষ্ট। সে জন্য অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানোর প্রায় চার ঘণ্টা পরে অস্ত্র-মামলার নথি পাঠিয়েছে পুলিশ।” মামলার সরকারি আইনজীবী প্রবীর রায় এই বক্তব্য খণ্ডনের চেষ্টা করেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে মঙ্গলকোটের ওসি সঞ্জয় কুণ্ডু ও তদন্তকারী অফিসারকে ১৯ জুলাই তাঁর এজলাসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন এসিজেএম।
আদালত চত্বরে ভিড় করেছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। ডাবলুর দাবি, “কান্দির ভাড়াবাড়িতে ঘুমোচ্ছিলাম। পুলিশ গিয়ে বলল, গাড়িতে উঠুন। বললাম, সব মামলায় তো জামিনে আছি। পুলিশ বলল, মঙ্গলকোটে গেলেই সব জানতে পারবেন।”