গরুপেটা করব, এজেন্টকে হুমকি দিয়েছিলেন দীপালি

বুথে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েইছে। কিন্তু, বুধবার, চতুর্থ দফার ভোটে সোনামুখীর তৃণমূল বিধায়ক দীপালি সাহা কার্যত দিনভর একাধিক বুথে ঢুকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলল সিপিএম। অভিযোগ, কখনও সিপিএমের পোলিং এজেন্টকে গরুপেটা করার হুমকি দিয়েছেন ওই দাপুটে তৃণমূল নেত্রী, কখনও আবার সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলরকে গালিগালাজ করেছেন।

Advertisement

স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়

সোনামুখী শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৪ ০৩:৫৭
Share:

সোনামুখীর থানাগড়ার বাড়িতে দীপালিদেবীর মেয়ে। ছবি: শুভ্র মিত্র।

বুথে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েইছে। কিন্তু, বুধবার, চতুর্থ দফার ভোটে সোনামুখীর তৃণমূল বিধায়ক দীপালি সাহা কার্যত দিনভর একাধিক বুথে ঢুকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলল সিপিএম। অভিযোগ, কখনও সিপিএমের পোলিং এজেন্টকে গরুপেটা করার হুমকি দিয়েছেন ওই দাপুটে তৃণমূল নেত্রী, কখনও আবার সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলরকে গালিগালাজ করেছেন।

Advertisement

এলাকার কিছু বাসিন্দা জানাচ্ছেন, ভোটের দিন সকাল থেকেই দীপালিদেবী ছিলেন রণংদেহি মেজাজে। বুথের ত্রিসীমানায় বিরোধীদের দেখলেই হুঙ্কার ছুড়ছিলেন তিনি। বিকেলে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সোনামুখীর সাহাপুর বুথে দলবল নিয়ে ঢুকে প্রিসাইডিং অফিসার-সহ ভোটকর্মীদের মেরে দেদার ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দীপালিদেবীর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা হলেও দীপালিদেবীকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।

দীপালি সাহা

Advertisement

সিপিএমের সোনামুখী জোনাল কমিটির সম্পাদক শেখর ভট্টাচার্য শুক্রবার বলেন, “সাহাপুর বুথে ওই কাণ্ড ঘটানোর কয়েক ঘণ্টা আগে সোনামুখী পুর এলাকার বাবুপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে সঙ্গীসাথী নিয়ে ঢুকে আমাদের পোলিং এজেন্ট কাঞ্চন নন্দীকে মারর হুমকি দিয়েছিলেন দীপালিদেবী।” কাঞ্চনবাবুর অভিযোগ, “গত বিধানসভা নির্বাচনে দীপালিদেবী সোনামুখীতে জেতার পরে তাঁর দলবল আমাকে মারে। বুধবার বুথে জোর করে ঢুকে আমাকে দেখে সেই পুরনো কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। শাসানি দেন, আগেই গরুপেটা পিটিয়েছিলাম। এ বারও গরুপেটা করব। আমি শেষ পর্যন্ত বুথেই ছিলাম।” সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর রিনা কর্মকারের দাবি, বাবুপাড়ার কাছেই মোহনানন্দ প্রাইমারি স্কুলের বুথের বাইরে দীপালিদেবীর সঙ্গে দেখা হতেই তিনি হুমকি দেন। রিনাদেবী বলেন, “আমাকে দীপালি বলে, সিপিএম করা না ছাড়লে এলাকাছাড়া করবে। সঙ্গে গালিগালাজ।”

বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ অবশ্য বলেন, “এ সবই সিপিএমের ধাপ্পাবাজি। প্রথমে বুথ দখল, এখন আবার নয়া অভিযোগ। মানুষ এ সব বিশ্বাস করছে না।”

সৌমিত্রবাবু এ কথা বললেও দীপালিদেবীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। গত বছর সোনামুখীর টাউন লাইব্রেরির ভোট গণনার দিন ব্যালট বাক্স ভেঙে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশে অভিযোগও হয়েছিল। শেখরবাবু বলেন, “পুলিশ তখনও হাত গুটিয়ে ছিল।” এ ক্ষেত্রেও বুথে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ পেয়ে দীপালিদেবীকে না ধরায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দীপালিদেবী কোথায় আছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। খোঁজ নেই তাঁর স্বামীরও। এ দিন সোনামুখীর থানাগড়া এলাকায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা মিলল তাঁর বিবাহিতা মেয়ের। তিনি বলেন, “বাবা-মা কোথায় জানি না। ফোনও করেননি।” বাঁকুড়ার এসপি মুকেশ কুমারও ফোন ধরেননি।

সাহাপুর বুথে যখন তাণ্ডব চলছিল, এক ভোটকর্মী সেই কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড করেছিলেন। মোবাইলের দু’টি ফাইলে প্রায় ১০ মিনিটের সেই রেকর্ডিং এখন প্রশাসনের জিম্মায় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন