গ্রামবাসীদের একাংশের রোষে পড়ে যাঁরা গ্রামছাড়া হয়েছেন, তাঁদের গ্রামে ফেরার আমন্ত্রন জানানোর জন্য দলের কর্মী-সমর্থকদের নির্দেশ দিলেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। সোমবার সকালে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক, জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমল হালদার, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার-সহ জেলার বেশ কিছু নেতা রায়নার উচিতপুর গ্রামের নিহত সিপিএম কর্মী স্বপন মালিকের বাড়ি যান। নিহতের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করেন দলের নেতারা।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খাদ্য সুরক্ষার কার্ডের সঠিক বন্টনের দাবিতে শ্যামসুন্দরে রায়না ১ বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিল সিপিএম। সেই দলে ছিলেন সিপিএমের সক্রিয় কর্মী স্বপন মালিকও। অভিযোগ, শ্যামসুন্দর কলেজের ছাত্রাবাস থেকে তৃণমূলের লোকজনেরা সিপিএমের মিছিল লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। আর তাতেই প্রাণ হারান স্বপনবাবু। এর পরে উচিতপুর-সহ পাশাপাশি কয়েকটি গ্রামের তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের উপর সিপিএমের লোকজন চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাতে উচিতপুর গ্রামেরই ৮-১০টি পরিবার গ্রাম ছাড়া হয়ে পড়ে। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। রবিবার বিকেলে স্থানীয় বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক এলাকা ঘুরে আসেন। এ দিন তিনি বলেন, “ওই পরিবাগুলিকে বাড়িতে ঢোকানোর জন্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই পরিবারগুলি বর্তমানে জামালপুরে আছেন।”
সিপিএম নেতারা জানিয়েছেন, নিহত স্বপন মালিককে দল ‘শহিদে’র মর্যাদা দিয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর উপস্থিতিতে স্মরণ সভা করা হবে। অমলবাবু বলেন, “এখনও দিনক্ষণ ঠিক করা হয়নি, তবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে সাঁকটিয়া মোড়ে স্মরণসভা করা হবে।” এ দিন উচিতপুর গ্রামে যাঁরা ঘর ছাড়া হয়ে আছেন, তাঁদেরকে বাড়িতে ঢোকানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, “একটি গ্রামের কেউ ঘর ছাড়া থাকবেন, সেটা ঠিক নয়। সে জন্য আমরা গ্রামের নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছি, ঘরছাড়াদের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ করুন। তারপর তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বাড়িতে ঢোকানোর ব্যবস্থা করুন।” অমলবাবুর আশা, ওই পরিবারগুলি দু’এক দিনের মধ্যে গ্রামে ঢুকে যাবেন। উজ্জ্বলবাবু জানান, ওই এলাকায় সভা করার ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্ব চিন্তাভাবনা করছেন।