ছাত্র-রাজনীতি ও টিউশনে মধ্যপন্থা চাইছে কমিশন

ছাত্র-রাজনীতির দাপাদাপিতে জেরবার অবস্থা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের। আবার প্রাইভেট টিউশনের বাড়াবাড়ির ফলে ক্রমশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে ক্লাসরুমের পঠনপাঠন। এই দুইয়ের দাপট সামলানো যে মোটেই সহজ কাজ নয়, সে-কথা কার্যত মেনে নিচ্ছে রাজ্য সরকারের গড়া শিক্ষা কমিশন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৭
Share:

ছাত্র-রাজনীতির দাপাদাপিতে জেরবার অবস্থা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের। আবার প্রাইভেট টিউশনের বাড়াবাড়ির ফলে ক্রমশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে ক্লাসরুমের পঠনপাঠন। এই দুইয়ের দাপট সামলানো যে মোটেই সহজ কাজ নয়, সে-কথা কার্যত মেনে নিচ্ছে রাজ্য সরকারের গড়া শিক্ষা কমিশন।

Advertisement

একই সঙ্গে কমিশন মনে করে, শিক্ষা ক্ষেত্রে এই দু’টি বিষয়ই খুব স্পর্শকাতর। কমিশন তাই সরকারের কাছে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করার আগে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নিতে চায়। একই সঙ্গে সরকারের মনোভাব যাচাই করে নিতে চাইছে তারা।

ক্ষমতায় আসার আগে-পরে শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্য জুড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজনীতির দাপট কমেনি। বরং কলেজে কলেজে হিংসা-হাঙ্গামায় অভিযোগের আঙুল উঠছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দিকেই। এই পরিস্থিতিতে ছাত্র-রাজনীতি বন্ধ না-করে তার দাপাদাপি কমানো এবং কোচিং ক্লাসের রমরমা ঠেকাতে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে বলে শিক্ষা কমিশনের অভিমত। কমিশন-কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে আলোচনাও করছেন। কমিশনের ওয়েবসাইট www.wbeducom.in চালু করে শুক্রবার এ কথা জানান চেয়ারম্যান সমীর ব্রহ্মচারী।

Advertisement

কিন্ডারগার্টেন থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পঠনপাঠনের সামগ্রিক উন্নতির ব্যাপারে সুপারিশ করার জন্য শিক্ষা কমিশন গড়েছে সরকার। কমিশন সম্প্রতি একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্টও পেশ করেছে সরকারের কাছে। এ বার একটি খসড়া সুপারিশ তৈরি করে ওই ওয়েবসাইটে দেবে কমিশন। ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক-সহ সকলের মত জানার পরে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করে পেশ করা হবে সরকারের কাছে।

কমিশনের মতে, ছাত্র-রাজনীতির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের অনেক ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কথায় কথায় ঘেরাও চলবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি কতটা থাকা উচিত, তার বহিঃপ্রকাশ কেমন হওয়া বাঞ্ছনীয় ইত্যাদি বিষয়ে চর্চা তো চলছেই। সেন্ট জেভিয়ার্সের মতো যে-সব কলেজে গতানুগতিক ছাত্র সংসদ নেই, সেখানকার মডেল নিয়েও আলোচনা চালাচ্ছে কমিশন।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ছাত্র সংসদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে কড়া বার্তা দিয়েছেন বারবার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গোলমালে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর নাম জড়িয়ে যাচ্ছে বারে বারেই। এতে যে আখেরে দলেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং তিনি যে বিষয়টি ভাল ভাবে নিচ্ছেন না, স্পষ্ট ভাবে সেই বার্তা দিয়েছেন পার্থবাবু। তৃণমূল ভবনে টিএমসিপি-র সঙ্গে বৈঠকেও সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী। শিক্ষা কমিশনও ছাত্রনেতাদের সংযত হওয়ার পক্ষে।

প্রাইভেট টিউশনের দাপট কমানো যাবে কী ভাবে? সমীরবাবু জানান, দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় সাহায্য করার জন ক্লাসের শেষে স্কুলেই টিউটোরিয়ালের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে কমিশনের অভিমত। তিনি বলেন, “স্কুলের সেই সব টিউটোরিয়ালে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা পড়াতে পারেন। বাইরের কোচিং ক্লাসের থেকে অনেক কম টাকায় ওই টিউটোরিয়ালে পড়ানোর বন্দোবস্ত হলে ছাত্রছাত্রীরাই উপকৃত হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন