ছাত্রনেতার হাতে সাইকেল বিলি, বিতর্ক

মন্ত্রী-বিধায়কের সামনে, সরকারি উৎসবের মঞ্চ থেকেই টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রকে সংবর্ধনা জানাল উৎসব কমিটি। সঙ্গে অনুষ্ঠানে হাজির তৃণমূল কর্মী, সমর্থকেরা তাঁর নামে স্লোগান দিলেন। পড়ুয়াদের সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল বিলিও করা হল তাঁর হাত দিয়ে। রবিবার দুপুরে মন্তেশ্বরের জেলা ছাত্র-যুব উৎসবে এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষরাও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন এ নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:১৩
Share:

সাইকেল বিলিতে ব্যস্ত টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র। নিজস্ব চিত্র।

মন্ত্রী-বিধায়কের সামনে, সরকারি উৎসবের মঞ্চ থেকেই টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রকে সংবর্ধনা জানাল উৎসব কমিটি। সঙ্গে অনুষ্ঠানে হাজির তৃণমূল কর্মী, সমর্থকেরা তাঁর নামে স্লোগান দিলেন। পড়ুয়াদের সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল বিলিও করা হল তাঁর হাত দিয়ে। রবিবার দুপুরে মন্তেশ্বরের জেলা ছাত্র-যুব উৎসবে এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষরাও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন এ নিয়ে।

Advertisement

অশোক রুদ্রুর সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন টিএমসিপির রাজ্য সহ সভাপতি সন্দীপ বসুও। তাঁর উপস্থিতি নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অশোকবাবুর অবশ্য দাবি, টিএমসিপি-র সভাপতি নন, রাজ্যের ক্রীড়া সংসদের সদস্য হিসাবে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান চলাকালীন কয়েকজন মঞ্চে গিয়ে সঞ্চালককে অনুরোধও করেন অশোকবাবুকে ‘টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি’ না বলে ‘রাজ্যের স্পোর্টস কাউন্সিল সদস্য’ বলে সম্বোধন করতে। অশোকবাবু বলেন, ‘‘জেলার ছেলে বলে কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে উঠেছিল। তবে কী বলে সম্বোধন করেছেন, তা শুনিনি।” সন্দীপবাবুর আবার দাবি, “আমি রাজ্যের যুব মন্ত্রীর প্রতিনিধি হয়ে মন্তেশ্বরের ছাত্রযুব উৎসবে গিয়েছিলাম।”

তবে উৎসব কমিটি যতই অস্বীকার করুক সভায় উপস্থিত জেলার বিভিন্ন এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ। সোমবার তাঁদের অনেকেই ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। আমাদেরকে মঞ্চের নীচে বসিয়ে রেখে অশোকবাবুকে টিএমসিপি-র সভাপতি পরিচয় দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বারেবারে ওই পরিচয় দেওয়ার পরে তাঁর হাত দিয়ে পড়ুয়াদের হাতে সবুজ সাথীর সাইকেলও তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমরা অপমানিত বোধ করেছি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উৎসব কমিটির সঙ্গে যুক্ত এক সদস্যেরও অভিযোগ, প্রথম দিকে বিষয়টি বোঝা যায়নি, পরে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই কয়েকজন গিয়ে সঞ্চালকের ভুল সংশোধন করে দেয়।” বিষয়টি নিযে সরব সিপিএমও। মন্তেশ্বরের বিধায়ক মহম্মদ হেদায়েতুল্লার অভিযোগ, “জেলা ছাত্র-যুব উৎসব তৃণমূলের উৎসবে পরিণত হয়েছে। উৎসবের পদযাত্রায় তৃণমূলের পতাকাও ছিল।” যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি উৎসব কমিটি।

Advertisement

ওই মঞ্চ থেকে রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। তবে মন্তেশ্বরের তৃণমূল সভাপতি তথা ওই উৎসব কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক সজল পাঁজার কথায়, “কোনও রকম রাজনৈতিক স্লোগান বা বক্তব্য ওই মঞ্চ থেকে রাখা হয়নি।’’ আর অশোক রুদ্রের উপস্থিতি নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘অশোকবাবুকে রাজ্য ক্রীড়া সংসদের সদস্য হিসাবে ও সন্দীপবাবুকে মন্ত্রীর প্রতিনিধি বলে আমাদের এই উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন