জিটি রোডে চার ঘণ্টা অবরোধ

মাত্র ছ’মাসের মধ্যে পিচ রাস্তা ভেঙে শুরু হয়েছে কংক্রিটের কাজ। তাতেই জিটি রোডের কিছুটা অংশ জুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। আর তাতেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে এই খানাখন্দ’র মেরামতির জন্য নানা মহলে আবেদন করেও ফল হয়নি। এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার সকালে প্রায় চার ঘন্টা জিটি রোড অবরোধ করলেন স্থানীয় স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩২
Share:

মাত্র ছ’মাসের মধ্যে পিচ রাস্তা ভেঙে শুরু হয়েছে কংক্রিটের কাজ। তাতেই জিটি রোডের কিছুটা অংশ জুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। আর তাতেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে এই খানাখন্দ’র মেরামতির জন্য নানা মহলে আবেদন করেও ফল হয়নি। এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার সকালে প্রায় চার ঘন্টা জিটি রোড অবরোধ করলেন স্থানীয় স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পরে জিটি রোড মেরামতির দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের এক সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে এসে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাস্তার গর্ত বুজিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

প্রশ্ন উঠেছে, ছ’মাস আগে যে রাস্তায় পিচ হয়েছিল কেন তা ভেঙে ফের কংক্রিট করা হচ্ছে। আবার প্রশ্ন উঠেছে, কংক্রিট করার যদি প্রয়োজনই থাকবে তবে প্রথমেই তা করা হয়নি কেন? তাহলে কি এ বিষয়ে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে? এ বিষয়ে জানার জন্য রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী ও পূর্ত সচিব ইন্দিবর পাণ্ডেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। তবে পূর্ত দফতরের এক কর্তা অভিজ্ঞতার ঘাটতির কথা মানতে রাজি নন। তাঁর কথায়, “গত বছর জিটি রোডের অবস্থা বেশ খারাপ হয়েছিল। বিশেষত বালি পুর এলাকায় বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়। তড়িঘড়ি করে রাস্তা পিচ করা হয়েছিল।”

Advertisement

কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে যে রাস্তা পিচ করা হল, সেই রাস্তাতেই জুন মাস থেকে ফের খোঁড়াখুড়ি কেন? পূর্ত দফতরের হাওড়া ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জিটি রোডের কিছু ক্ষতিগ্রস্থ জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে ম্যাসটিক অ্যাসফাল্ট করা হয়নি। শুধু হালকা বিটুমিনাস করা হয়েছিল। সেখানেই পিচ তুলে কংক্রিট করা হচ্ছে।”

রাস্তা ভাঙা থাকার সময়েই কংক্রিটের কাজ করা যেত বলে মনে করেন রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ইঞ্জিনিয়াররা। যেমন দুর্গাপুরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আধ্যাপক তথা নির্মাণ ইঞ্জিনিয়ার অলোক সরকারের মতে “রাস্তায় কংক্রিটের স্থায়ীত্ব অনেক বেশি। তবে রাস্তা যখন খারাপ ছিল সেই সময়ই এক বার বিটুমিনাস করে পরে আবার কংক্রিট করার দরকার ছিল না। প্রথমেই কংক্রিট করতে তো কোন পরিকাঠামোগত সমস্যা নেই। তা হলে এক রাস্তায় দু’বার কাজ দরকার হত না।” পূর্ত দফতরের কর্তারা বলছেন, প্রথমে পিচ না করলে জিটি রোড আরও ভয়ঙ্কর আকার নিত। তাই তড়িঘড়ি করে পিচ করার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্থায়ী মেরামতি হিসেবে কংক্রিট করার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জিটি রোডে পিচ তুলে কংক্রিট করার বিষয়ে গত মে মাসে পুলিশ, পূর্ত ও স্থানীয় ব্যবসায়ী, বাস মালিকদের বৈঠক হয়। তাতে পূর্ত দফতরের এই কাজে প্রত্যেকেই আপত্তি জানায়। কিন্তু পূর্ত দফতর আশ্বাস দেয় যত শীঘ্র সম্ভব রাস্তার কাজ শেষ হবে। সেই মতো জুন মাস থেকে শুরু হয় কংক্রিটের কাজ। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, বেলুড় থেকে সালকিয়া পর্যন্ত জিটি রোডের কিছু অংশে কংক্রিটের কাজ করা হচ্ছে। এর জন্য রাস্তার এক পাশ বন্ধ রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন