জেরবার মুখ্যমন্ত্রী তোপ দাগলেন সংবাদমাধ্যমকেই

সারদা-তদন্তে জড়িয়ে গিয়েছে তাঁর নাম। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে তাঁর পদত্যাগের দাবি পর্যন্ত উঠতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির থেকে। এমন চাপের মুখে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তাঁর চেনা কায়দায় নিশানা করলেন সেই সংবাদমাধ্যমকেই! তিনি নিজে, তাঁর সরকার বা দলকে ‘নিষ্কলঙ্ক’ প্রমাণের জন্য শুক্রবার অন্তত কোনও যুক্তিগ্রাহ্য তথ্য শোনা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীর মুখে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪
Share:

সারদা-তদন্তে জড়িয়ে গিয়েছে তাঁর নাম। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে তাঁর পদত্যাগের দাবি পর্যন্ত উঠতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির থেকে। এমন চাপের মুখে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তাঁর চেনা কায়দায় নিশানা করলেন সেই সংবাদমাধ্যমকেই!

Advertisement

তিনি নিজে, তাঁর সরকার বা দলকে ‘নিষ্কলঙ্ক’ প্রমাণের জন্য শুক্রবার অন্তত কোনও যুক্তিগ্রাহ্য তথ্য শোনা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। বরং, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষক দিবসের মঞ্চকে বেছে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সব দোষ চাপিয়েছেন সংবাদমাধ্যমের ঘাড়েই! বলেছেন, “এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম যা পারল, আপনার নামে বলে গেল। আপনি চুরি করেছেন। আগে দ্যাখ, চুরি করেছে কি না! কাকে কান নিয়ে পালাল বলে খবর করছে! এক বার ভাবার চেষ্টা করছে না, কাকে বলছি, কী বলছি, কোন কথাটা বলছি! সব সীমারেখা অতিক্রম করে যাচ্ছে।”

সরাসরি সারদা-তদন্তের কথা তিনি বলেননি ঠিকই। তবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন যে ভাবে ‘যা পারছে, বলে যাচ্ছে’ বলে সংবাদমাধ্যমকে তুলোধোনা করেছেন, সেই উষ্মার নেপথ্যে রেল-সারদা যোগসাজশ নিয়ে তথ্য উদঘাটনই দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। প্রত্যাশিত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ‘মিডিয়া-তোপে’র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিরোধী নেতারা।

Advertisement

সারদার মতো অর্থলগ্নি সংস্থার দ্বারা পুষ্ট সংস্থার কর্মীদের অনেকেই এখনও কেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীদের কেউ কেউ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, “এখন সারদা-সহ বিভিন্ন চিট ফান্ডের কুকীর্তির কথা প্রকাশ্যে আসছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন! তিনি সংবাদমাধ্যমকে ভিলেন বানিয়ে পার পেতে চাইছেন!” সেই সঙ্গেই তাঁর অভিযোগ, “আজও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের নিয়ে এ দিক-ও দিক বেড়াতে যান। তাঁদের মধ্যে এমন লোকও আছেন, যাঁরা বিভিন্ন চিট ফান্ড দ্বারা পুষ্ট সংস্থায় চাকরি করেন!” অধীরের মতো প্রায় একই সুরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহেরও অভিযোগ, “একটি অসৎ সংস্থার টাকায় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে কিনে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিলেন! ভেবেছিলেন সংবাদমাধ্যম ওঁর বশ্যতা মেনে চলবে। অচিরেই বুঝেছেন, এটা তাঁর দুরাশা!” তার জেরেই সংবাদমাধ্যমের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর বিষোদ্গার বলে রাহুলবাবুর মত। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকণ্ডলীর সদস্য ও সাংসদ মহম্মদ সেলিমের অবশ্য অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছেন। সংবাদমাধ্যম সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলার মানে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া।” সিপিএমের অভিযোগ, এত দিন সরকারি টাকায় পুলিশ, আইন-আদালতের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বারবার চেষ্টা করেছেন, যাতে সত্য উদ্ঘাটিত না হয়। সেলিমের কথায়, “এর ফলে সিআইডি, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট, সিট সবার বদনাম হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন