তাণ্ডবে এজলাস ছেড়েও হুকুম বহাল হাকিমের

তুমুল চেঁচামেচি আর হইহট্টগোলে বিরক্ত হয়ে হাকিম সাময়িক ভাবে এজলাস ছেড়ে চলে গেলেও হুকুম নড়ল না। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে। জালিয়াতির অভিযোগে ক্যানিংয়ে মহকুমাশাসকের দফতরের এক কর্মীকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার ওই আদালতে তুলেছিল পুলিশ। বিচারক সব শুনে ধৃতের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আর তাতেই বাধে বিপত্তি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৯
Share:

তুমুল চেঁচামেচি আর হইহট্টগোলে বিরক্ত হয়ে হাকিম সাময়িক ভাবে এজলাস ছেড়ে চলে গেলেও হুকুম নড়ল না।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে। জালিয়াতির অভিযোগে ক্যানিংয়ে মহকুমাশাসকের দফতরের এক কর্মীকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার ওই আদালতে তুলেছিল পুলিশ। বিচারক সব শুনে ধৃতের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আর তাতেই বাধে বিপত্তি।

সরকারি কর্মী হওয়া সত্ত্বেও ধৃতকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তুলে তৃণমূল সমর্থিত আইনজীবীদের একাংশ আদালতেই হইচই শুরু করে দেন। আদালত কক্ষের ভিতরে-বাইরে হট্টগোল ছড়িয়ে পড়ে। বিরক্ত হয়ে বিচারক এক সময় এজলাস ছেড়ে নিজের ঘরে চলে যান। আটকে যায় অন্যান্য মামলার কাজ। বিকেল সাড়ে ৫টায় গোলমাল শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বিচারক এজলাসে ফিরে আসেন। আইনজীবীদের চাপের মুখে অনড় থেকে তিনি নিজের নির্দেশ বহাল রাখেন। অন্যান্য মামলাও শোনেন।

Advertisement

পুলিশি সূত্রের খবর, ক্যানিংয়ে মহকুমাশাসকের দফতরের ওই অভিযুক্ত কর্মীর নাম বিষ্ণু মজুমদার। তাঁর বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জাল শংসাপত্র দেওয়া ছাড়াও নানা ধরনের জালিয়াতির অভিযোগ আছে। নিজের দফতরে তাঁর প্রচণ্ড দাপট। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, ধৃত ব্যক্তি জালিয়াত চক্রের মূল পাণ্ডা বলে মনে করা হচ্ছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মাহাতোর নেতৃত্বে এক দল পুলিশ বারুইপুরের চম্পাহাটিতে তাঁকে গ্রেফতার করে।

ঘুটিয়ারি শরিফের এক কলেজ-ছাত্র এবং মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্যের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই জালিয়াত চক্র নিয়ে তদন্ত শুরু করে। এই ঘটনায় ধৃতের নিয়োজিত দুই দালালকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, মোটা টাকা নিয়ে তারা জাল শংসাপত্র তৈরি করে দিত বলে ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে। বিষ্ণু এই কাজের জন্য চারটি ব্লক এলাকায় চার জন দালাল নিয়োগ করেছিলেন। তাদের কাছ থেকে তিনি সপ্তাহে লক্ষাধিক টাকা নিতেন বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার বিষ্ণুকে আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। ভারপ্রাপ্ত বিচারক জয়ন্ত ভট্টাচার্য তাঁকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ জানায়, বিষ্ণু ক্যানিং মহকুমাশাসকের দফতরের আপার ডিভিশনাল ক্লার্ক বা নাজির-পদে কাজ করেন। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কর্মী সংগঠনের নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন