তৃণমূল অফিস থেকে নিখোঁজ আজাদের দেহ মিলল চর খুঁড়ে

বোলপুরে তৃণমূলের অফিস থেকে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন গত বুধবার। প্রায় এক সপ্তাহ পরে নানা দুষ্কর্মে অভিযুক্ত আজাদ মুন্সির দেহ মিলল মঙ্গলকোটের অজয় নদের চর খুঁড়ে। যে এলাকা ছিল এক সময়ের ডেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০৩
Share:

বোলপুরে তৃণমূলের অফিস থেকে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন গত বুধবার। প্রায় এক সপ্তাহ পরে নানা দুষ্কর্মে অভিযুক্ত আজাদ মুন্সির দেহ মিলল মঙ্গলকোটের অজয় নদের চর খুঁড়ে। যে এলাকা ছিল এক সময়ের ডেরা।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকেলে চরের বালি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় আজাদের দেহ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৯ ফুট গভীর গর্তে ফ্লেক্স দিয়ে হাত-পা মুড়ে রাখা ছিল দেহটি। সকালে গরু চরাতে গিয়ে স্থানীয় কয়েক জন দুর্গন্ধ পাওয়ার পরে আশপাশের বাসিন্দারা খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন। তবে এলাকাটি কোন জেলায় পড়ছে, সে নিয়ে বর্ধমান ও বীরভূম জেলা পুলিশের টানাপড়েনে দীর্ঘ ক্ষণ দেহ তোলা হয়নি। শেষে দু’দিকের পুলিশই আমিন নিয়ে যায়। তাঁরা ম্যাপ দেখার পরে দেহ তোলে মঙ্গলকোটের পুলিশ। দেহ শনাক্ত করেন আজাদের ভাই অঞ্জন মুন্সি। বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া মন্তব্য করতে চাননি।

আজাদের পরিবারের অভিযোগ, গত ৩ সেপ্টেম্বর বোলপুরে তৃণমূলের অফিস থেকে নিখোঁজ হয়ে যান মঙ্গলকোটের আড়াল গ্রামের বাসিন্দা আজাদ মুন্সি। বোলপুর থানার অদূরে ওই অফিস থেকেই দল চালান বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুর থানায় প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি, পরে অপহরণ করে খুনের আশঙ্কায় ১৪ জনের নামে এফআইআর করেন আজাদের ভাই অঞ্জন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের মঙ্গলকোটের লাখুরিয়া অঞ্চল সভাপতি অসীম দাস, মঙ্গলকোট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শান্ত সরকার। তাঁরা অনুব্রতর অনুগামী বলে পরিচিত।

Advertisement

পুলিশকে অঞ্জন জানিয়েছিলেন, ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আজাদ তাঁর সঙ্গেই বোলপুরে তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিসে বসেছিলেন। আজাদের মোবাইলে একটি ফোন আসায় তাঁরা পার্টি অফিস থেকে নীচে নামেন। অঞ্জনের দাবি, লাখুরিয়ার অসীমবাবু এবং মঙ্গলকোটের ঝিলেরা গ্রামের সাইফুল খাঁ ও সামু শেখ সেখানে এসে আজাদের সঙ্গে দেখা করেন। কিছু কথার পরে আজাদ মোটরবাইক নিয়ে ওই তিন জনের সঙ্গে চলে যান। তার পর থেকে তিনি নিখোঁজ। অঞ্জন বলেন, “পরিকল্পনা করে দাদাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে দেহ লোপাটের আশঙ্কা আগেই করেছিলাম। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।”

আজাদ এক সময়ে স্থানীয় সিপিএম নেতা ডাবলু আনসারির অনুগামী ছিলেন। পরে নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের ঘনিষ্ঠ হন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বীরভূমের নানুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আনন্দ দাস খুন-সহ নানা ধরনের ৩৫টি মামলায় অভিযুক্ত আজাদ। দলবল নিয়ে তিনি থাকতেন অজয়ের চরে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, দিনের পর দিন গ্রামে ফিরতে না পেরে অনুব্রত মণ্ডলের অফিসে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন