তৃণমূলের সঙ্গে জোট কিনা, প্রশ্নের মুখে অধীর-মানস

দিল্লিতে বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলের সঙ্গে গা ঘেষাঁঘেষিতে অস্বস্তি বাড়ছে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের। ব্যাপরটা ২৪ ঘণ্টা আগেই আঁচ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাই শুক্রবার দিল্লিতে সংসদ ভবনের সামনে ধর্নার সময়ে তৃণমূল নেতাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন অধীরবাবু। কিন্তু শনিবারই নিজের রাজ্যে সরাসরি দলীয় কর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তাঁকে। আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস জোট বাঁধবে কিনা তা নিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রশ্নের তিরে বিব্রত হন অধীরবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর ও এগরা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২০
Share:

কৃষ্ণনগরের দলীয় কর্মিসভায় অধীর। ছবি :সুদীপ ভট্টাচার্য।

দিল্লিতে বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলের সঙ্গে গা ঘেষাঁঘেষিতে অস্বস্তি বাড়ছে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের।

Advertisement

ব্যাপরটা ২৪ ঘণ্টা আগেই আঁচ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাই শুক্রবার দিল্লিতে সংসদ ভবনের সামনে ধর্নার সময়ে তৃণমূল নেতাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন অধীরবাবু। কিন্তু শনিবারই নিজের রাজ্যে সরাসরি দলীয় কর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তাঁকে। আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস জোট বাঁধবে কিনা তা নিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রশ্নের তিরে বিব্রত হন অধীরবাবু। এ দিন কৃষ্ণনগরে কংগ্রেসের কর্মিসভায় রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরীর উদ্দেশে সমর্থকরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, জোট হবে কিনা। অধীর স্পষ্ট উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তৃণমূলের উপরেই জোটের দায় চাপান। আবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি মানস ভুঁইঞাকেও কর্মিসভায় স্পষ্ট করতে হল, সংসদের ধর্ণা একটা মিলিত প্রতিবাদ ছিল কেবল।

এ দিন কৃষ্ণনগরের পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে অধীর বক্তব্য রাখতে উঠলে প্রায় গোড়াতেই উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে থেকে চিৎকার করে জানতে চাওয়া হয়, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে জোট হবে কিনা?’’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই জানতে চাইছেন জোট হবে কিনা। জোট হওয়ার গরজ কংগ্রেসের নেই। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকমে বন্ধুত্ব করে সিবিআই-এর হাত থেকে রক্ষা পেতে চাইলে সে দায় তৃণমূলের।’’ তাঁর দাবি, সংসদে কংগ্রেসের বিজেপি-বিরোধিতায় তৃণমূল সামিল, হয়েছে বলে অনেক সংবাদমাধ্যম বলার চেষ্টা করছে ‘দিল্লিতে দোস্তি আর বাংলায় কুস্তি।’ এরপরেই তিনি বলেন, “১২৮ বছর ধরে কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য লড়াই করছে। সেই লড়াইয়ে কেউ পাশে থেকেছে আবার কেউ সরে গিয়েছে। সেটা তাদের বিষয়।’’ অধীর এরপর আরও স্পষ্ট করে বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আমরা যদি আন্দোলন করি, কেউ যদি তা সমর্থন করে, তার দায় তাদের। তার মানে এই হয়ে যায় না যে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কেউ যদি আসে সেটা তার গরজ। কংগ্রেসের নয়।’’

সভার পরে অধীরকে তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, “জোট করার কোনও প্রশ্নই আসে না। আমরা একাই লড়াই করছি।’’

মানসবাবুকেও এ দিন জোট প্রসঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। এগরা ঝটুলাল হাইস্কুলের কর্মিসভায় তিনি বলতে ওঠার আগে তৃণমূলের সঙ্গে বিধানসভার জোট নিয়ে একের পর এক ব্লক সভাপতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, যে তৃণমূল কংগ্রেসের এত ক্ষতি করেছে, আসন বণ্টনের প্রশ্নে তার কাছেই দলকে নতিস্বীকার করতে হয়েছে। মানস তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “আসলে বিধানসভা ভোটে সিপিএমকে হারাতে মাথা নিচু করে জোট মেনে নিয়েছিলাম।” কর্মীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে মিশে যায়নি। সংসদের বাইরে মিলিত প্রতিবাদ করেছে কেবল। এর বাইরে কিছু নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন