আবু বক্কর কয়াল
টানা বৃষ্টিতে গ্রামে জল দাঁড়িয়েছে। ত্রাণের ত্রিপল চাইতে তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়েছিলেন সিপিএমের কিছু লোকজন। প্রথমে বচসা, পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে খুন হলেন এক সিপিএম কর্মী। যদিও শুধু মাত্র ত্রাণের দাবিতেই গোলমাল শুরু কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁয় ধুতুরদহ পঞ্চায়েতের দক্ষিণ বারগা গ্রামে। নিহতের নাম আবু বক্কর কয়াল (৩৫)। তাঁকে খুনের অভিযোগে এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা মনসুর মোল্লা-সহ পাঁচ জনকে মারধর করে সিপিএমের লোকজন। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে আটক করেছে। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’পক্ষের মারপিট বেধেছিল। গুলি চলে। কয়েক জনকে জেরা করা হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
ধুতুরদহ পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে থাকলেও দক্ষিণ বারগা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের। আগেও গ্রামে খুনোখুনি হয়েছে। বছর দেড়েক আগে তৃণমূল নেতা নূর আহমেদের ছেলে সাজাহান খুন হন। তার পাল্টা হামলায় অভিযুক্ত মনসুর। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় কয়েক মাস আগে পুলিশ-প্রশাসন ও দলীয় নেতৃত্বের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর বাড়ির কাছে পুলিশ ক্যাম্পও বসে। সেখানে দু’জন বন্দুকধারী পুলিশ থাকেন।
নিহত আবু বক্করের ভাই ইসমাইল কয়াল বলেন, ‘‘আমরা জনা পনেরো ত্রাণের ত্রিপল চেয়েছিলাম মনসুরের কাছে। শুধু তৃণমূলের লোকজনই ত্রিপল পাবে কেন, সে প্রশ্ন তুলতেই বচসা বাধে। হঠাৎ ওরা গুলি চালাতে শুরু করে।’’ সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য নুর ইসলাম মোল্লা, স্থানীয় নেতা আয়ুব মোল্লার দাবি, ‘‘ত্রাণ চাইতে মনসুর বলে, ‘আগে তৃণমূল করো, তার পরে ত্রাণ পাবে।’ বচসা বাধে। ওরা গুলি চালাতে শুরু করে।”
তবে মনসুরের দাবি, ত্রাণ চাওয়ার অছিলায় আসলে তাঁকে খুনের ছক কষা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আবু বক্কর এক জনের দিকে বন্দুক তাক করেছিল। তার সঙ্গে অন্য এক জনের ধস্তাধস্তি হতেও দেখেছি। তবে কে কাকে গুলি করেছে, জানি না।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আবার দাবি করেন, ‘‘সিপিএমের কর্মী ওদের নিজেদের গুলিতেই মারা গিয়েছে। ওখানে ভেড়ির দখল নিয়ে দুষ্কৃতীদের লড়াই দীর্ঘ দিনের। এ দিনের ঘটনাও তা নিয়েই। মনসুরের উপরে ওরাই হামলা চালায়। তার পরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।”