এভারেস্ট জয়ের ৬১ বছর ও তেনজিং নোরগের শতবর্ষ পূর্তি উদ্যাপন। শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড়ে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
কাঞ্চনজঙ্ঘার ইয়ালুং কাং অভিযানে গিয়ে ছন্দা গায়েনের সঙ্গে নিখোঁজ দাওয়া শেরপা এবং তেমবা শেরপাও। মধ্য বিশের দাওয়া শেরপার বাড়ি দার্জিলিঙের কাছে ঘুমের খাসমল বস্তিতে। তাঁর মূল বাড়ি কার্শিয়াঙের বাগোড়ায়। মাস চারেক হল বিয়ে করেছেন তিনি। তেমবা শেরপা নেপালের বাসিন্দা। শেরপাদের একটি সংগঠনের অভিযোগ, দাওয়া এবং তেমবাকে নিয়ে রাজ্য সরকার উদাসীন। ছন্দার বাড়িতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা গিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যেরই বাসিন্দা নিখোঁজ দাওয়া শেরপার বাড়িতে সরকারের তরফে কেউ যাননি।
তবে নিখোঁজ দুই শেরপা সম্বন্ধে সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি জানিয়েছেন, ছন্দার সঙ্গে সঙ্গেই নিখোঁজ দুই শেরপাকেও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তিনি নিজে দ্রুত দাওয়া শেরপার বাড়ি যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে এ দিন ওই দুর্ঘটনা র জেরেই বিষাদ ও বিতর্কের মধ্যে কাটল এভারেস্ট জয়ের ৬১ তম বর্ষ ও তেনজিং নোরগের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব। সম্প্রতি ১৮ এপ্রিল এভারেস্ট অভিযানে তুষার ধসে ১৬ জন মারা যান। সেই শোকের ছায়াও এ দিন উৎসবের উপরে পড়ে। এ দিন ‘এভারেস্ট দিবস’ পালনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয় শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিঙে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ) এবং হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)-এর তরফে দার্জিলিং মোড়ে যে অনুষ্ঠান হয়, সেখানেই নিখোঁজ শেরপাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তোলেন শিলিগুড়ি শেরপা বুদ্ধিস্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার এবং ইউনাইটেড শেরপা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। দার্জিলিঙে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের অনুষ্ঠানেও ইউনাইটেড শেরপা অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা একই অভিযোগ তোলেন। সংগঠনের সহ সভাপতি পি টি শেরপা এ দিন দার্জিলিঙে বলেন, “শেরপাদের প্রতি সরকার কেন উদাসীন তা বুঝতে পারছি না।” তিনি একই ঘটনা ঘিরে সরকারের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গিতে তাঁরা ব্যথিত। শেরপা সংগঠনের সদস্যদের এই অভিযাগকে সমর্থন করেন ন্যাফের কর্মকর্তারাও। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “আমিও এ ব্যাপারে এক মত। যে শেরপারা নিখোঁজ হয়েছেন তাঁদের বিষয়টিও সমান গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।”
তবে জিটিএ দাবি করেছে, তাদের প্রতিনিধিরা দাওয়া শেরপার বাড়ি গিয়েছিলেন। সম্প্রতি ফেসবুকে ছন্দা গায়েনের সঙ্গে দাওয়া শেরপার জন্যও প্রার্থনা জানিয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান বিমল গুরুঙ্গ। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারকে দাওয়া শেরপার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
এ দিন শিলিগুড়িতে ন্যাফ এবং শেরপা সংগঠনের তরফে তেনজিং নোরগের শতবর্ষে তাঁকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান দেওয়ার দাবি তোলা হয়।