জেলা-কলকাতা যোগাযোগ

দ্রুত চলাচলে ছ’টি রাস্তা করছে রাজ্য

সমস্ত জেলার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ সুগম করতে ছ’টি রাস্তা তৈরি করবে রাজ্য। কয়েকটি প্রধান সড়কের সংযোগকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে রাস্তাগুলি। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সড়ক উন্নয়ন নিগমের হাতে। নিগম সূত্রে খবর, এক হাজার কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে, যা বহন করবে রাজ্য সরকার। অর্থ দফতর এই টাকা মঞ্জুর করেছে।

Advertisement

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১১
Share:

সমস্ত জেলার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ সুগম করতে ছ’টি রাস্তা তৈরি করবে রাজ্য। কয়েকটি প্রধান সড়কের সংযোগকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে রাস্তাগুলি। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সড়ক উন্নয়ন নিগমের হাতে। নিগম সূত্রে খবর, এক হাজার কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে, যা বহন করবে রাজ্য সরকার। অর্থ দফতর এই টাকা মঞ্জুর করেছে।

Advertisement

নিগমের কর্তারা জানিয়েছেন, ২০১২ সালের মার্চে এই সংস্থা তৈরি হয়। সেই সময় দক্ষিণ কলকাতা থেকে সদ্য সাংসদ হওয়া সুব্রত বক্সির হাতে সংস্থার দায়িত্ব তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী ছিলেন সুব্রতবাবু। সে কারণেই সড়ক উন্নয়নের দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়। পূর্ত দফতরের মন্ত্রীকে নিগমের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। অর্থ সচিব, শিল্প সচিব, ভূমি ও ভূমি সংস্কার সচিব, পূর্ত সচিব, বিদ্যুৎ সচিব-সহ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়। প্রধান সচিব পদমর্যাদার এক অফিসারকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর করা হয়। রাজ্যের সমস্ত বড় রাস্তাগুলিকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে কাজ শুরু করে নিগম। প্রথম জোনে ছ’টি রাস্তাকে রাখা হয়েছে। নিগম কর্তাদের দাবি, সংস্থা তৈরি হওয়ার পরে এটি ছিল সবচেয়ে বড় প্রকল্প। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই রাস্তাগুলির সম্প্রসারণ করতে অতিরিক্ত কোনও জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। প্রতিটি রাস্তাকেই এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাগুলি কার্যত বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে।

নিগমের এক কর্তা বলেন, “প্রায় দেড় বছর ধরে প্রায় ছ’টি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়েছে। তার পরে জোন ভাগ করে রাস্তাগুলি তৈরি করার পরিকল্পনা হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে টেন্ডারের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়েছে।” তবে অভিযোগ উঠেছে, যে গতিতে সড়ক উন্নয়ন নিগম কাজ করছে তাতে সমস্ত রাস্তা শেষ করতে প্রায় ১০ বছর লেগে যাবে। নিগম কর্তারা যদিও তা মানতে চাননি।

Advertisement

সড়ক উন্নয়ন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগের জন্য প্রায় ৩১ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হবে। সেটি তৈরি হলে সুন্দরবন থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পৌঁছনো সম্ভব হবে বলে দাবি কর্তাদের। নিগম সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটকপুকুর থেকে উত্তর ২৪ পরগনার মালঞ্চ হয়ে সরবেড়িয়া পর্যন্ত ওই রাস্তার সম্প্রসারণ ও সংস্কারে খরচ হবে প্রায় ১৪৭ কোটি টাকা। এই রাস্তায় জুড়ে যাবে হাড়োয়া, মিনাখাঁ ছাড়াও সন্দেশখালি ব্লকের একটি বড় অংশ। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট (ডিপিআর) জমা পড়েছে। তার পরে ই-টেন্ডার দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কাজও শীঘ্র শুরু হবে বলে জানান নিগম কর্তারা।

হুগলির চণ্ডীতলার শিয়াখালা হয়ে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তাও নতুন করে তৈরি করা হবে। এই রাস্তা তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ১৪৪ কোটি টাকা।

হুগলির চন্দননগর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার রাস্তাকে চার লেনের করা হবে। এ ছাড়া চন্দননগর থেকে নদিয়ার বড়জাগুলি পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ করা হবে। এর ফলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েকে জুড়ে দেওয়া যাবে। এ ছাড়া হুগলির সপ্তগ্রাম থেকে কালনা-কাটোয়ার ৩৩ কিলোমিটার রাস্তাও সম্প্রসারিত করবে নিগম। বড়জোড়া-মেজিয়ার দুর্লভপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তাও সংস্কারের পাশপাশি সম্প্রসারণ হবে। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় পূর্ব মেদিনীপুরের মেচোগ্রাম থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে। ওই রাস্তা পাঁশকুড়া, ঘাটাল, আরামবাগ, বর্ধমানের সঙ্গে হলদিয়া বন্দরকে জুড়বে। এই রাস্তা তৈরি হয়ে গেলে হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন দিক তৈরি হবে। এই রাস্তার পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করেছে খড়্গপুর আইআইটি। তা জমা দেওয়ার পরে টেন্ডারের প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে বলে নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement