নেতাদের কথায় গা-ঢাকা দিই, কবুল রিয়াজের

এলাকার তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ শুনেই তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন পটনায়। হাওড়া হোটেল কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত রিয়াজ আহমেদ জেরার মুখে এমনই কথা জানিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। তবে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে, নাকি ওই নেতাদের পরামর্শ শুনে তিনি হাওড়ায় ফিরে আত্মসমর্পণ করেছেন, তা নিয়ে সোমবারেও ধোঁয়াশা কাটেনি। গ্রেফতার করা যায়নি অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত দীপক সাউকেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫৮
Share:

এলাকার তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ শুনেই তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন পটনায়। হাওড়া হোটেল কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত রিয়াজ আহমেদ জেরার মুখে এমনই কথা জানিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। তবে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে, নাকি ওই নেতাদের পরামর্শ শুনে তিনি হাওড়ায় ফিরে আত্মসমর্পণ করেছেন, তা নিয়ে সোমবারেও ধোঁয়াশা কাটেনি। গ্রেফতার করা যায়নি অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত দীপক সাউকেও।

Advertisement

পুলিশি সূত্রের খবর, রিয়াজকে জেরা করে জানা গিয়েছে, ২৩ জুন সকালে হাওড়ার ব্রিজ হোটেলের মালিক সুমিত নাহার মৃত্যুতে নিজের নাম জড়িয়ে যাওয়ার খবর জানতে পেরে ভয় পেয়ে যান তিনি। তখন স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল নেতাই তাঁকে অন্তত কয়েকটা দিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকার পরামর্শ দেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ সুমিতবাবুর ফোনের কললিস্ট থেকে জানতে পেরেছিল, তাঁকে রাতে ফোন করেছিলেন রিয়াজ। পুলিশের দাবি, জেরায় রিয়াজও স্বীকার করেছেন, ২২ জুন রাতে তিনিই সুমিতবাবুকে ফোন করেছিলেন। কেন ফোন করেছিলেন?

Advertisement

জেরায় রিয়াজ পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই দিন রাত ১১টার কিছু আগে তিনি সুমিতবাবুকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ব্রিজ হোটেলের ম্যানেজার আশিস মান্না তাঁর ও দীপকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। অন্য লোকেদের সঙ্গেও আশিসবাবু খারাপ আচরণ করছেন বলে সুমিতবাবুকে ফোনে জানিয়েছিলেন রিয়াজ। গোলাবাড়ি থানায় যে-অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, আশিস যাতে তা তুলে নেন, সেই জন্যই রিয়াজ রাতে সুমিতবাবুকে ফোন করেছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তদন্তকারী অফিসারদের কাছে তিনি দাবি করেছেন, সে-রাতে ফোন করলেও সুমিতবাবুকে প্রাণনাশের কোনও হুমকিই দেননি তাঁরা।

রিয়াজ ধরা পড়লেও পুলিশ এখন দীপককে গ্রেফতার করতে পারেনি। এর মধ্যেই রবিবার রাতে ফের দু’টি ফোন পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন হোটেল-মালিক সুমিতবাবুর মা মঞ্জুদেবী। এ দিন মঞ্জুদেবী জানান, ২৯ জুন রাতে ফের দু’টি অজানা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। তিনি বলেন, “ফোনে এক পুরুষকণ্ঠ বলে, ‘আপনার হোটেলে কোনও নতুন ম্যানেজার লাগবে? আমাকে রাখবেন আপনার হোটেলে?’ কে বলছেন জিজ্ঞাসা করতেই ফোন কেটে দিচ্ছে। আমি পুলিশকে সব জানিয়েছি।”

মঞ্জুদেবী জানান, ৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার সুমিতবাবুর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তা হলেই ৪ বা ৫ জুলাই থেকে তিনি নিজে হোটেলে বসবেন। তিনি বলেন, “হোটেল না-চালালে খাব কী? নাতি নাতনি আছে। ছেলের বৌ আছে। ওদের তো আমাকেই দেখতে হবে।” মঞ্জুদেবীর পরিবারের লোকেরা জানান, তাঁর শরীর খারাপ। রাতে বিশেষ ঘুমোতে পারছেন না। হাঁটাচলা করছেন ‘ওয়াকার’ নিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন