ডানকুনি টোল প্লাজার কর্মীকে জুতো পেটা করা ও লেকটাউনে ট্রাফিক পুলিশের এক কনস্টেবলকে চড় মারার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কোনও ‘ব্যবস্থা না নেওয়ার’ প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন আইনজীবী বিপ্লব চৌধুরী।
৭ ডিসেম্বর দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ডানকুনি টোল প্লাজার এক কর্মীকে জুতোপেটা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা আবু আয়েশ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। গত মাসে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও লেকটাউনে ট্রাফিক কনস্টেবলকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছিল। প্রসূনবাবুর গাড়ি ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এই অভিযোগে তারাগতি বিশ্বাস নামে ওই কনস্টেবল গাড়িটি আটকান। এই দুই ঘটনায় পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি বলে হাইকোর্টের কাছে অভিযোগ করেছেন বিপ্লববাবু।
ওই আইনজীবীর আর্জি, রাজ্য জুড়ে পুলিশ নিষ্ক্রিয়। শাসক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করুক।
আদালতে আইনজীবীর এই আর্জি নিয়ে পুলিশ কী বলছে? হুগলি জেলা পুলিশের দাবি, আবু আয়েশ মণ্ডলের ঘটনায় অভিযোগকারী তিন টোলপ্লাজার কর্মীর বয়ান নেওয়া হয়। সিসিটিভি-র ফুটেজ পরীক্ষা পর ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারী অফিসার। কিন্তু তার পরেও ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি তার জবাব মেলেনি পুলিশের কাছে। আবু আয়েশ ওই ঘটনার পরে তাঁর সরকারি পদ হারালেও, জুতোপেটার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ট্রাফিক কনস্টেবলের মানসিক সুস্থতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। আর পুলিশ কী করেছে? তদন্ত করছে বিধাননগর কমিশনারেট। অভিযোগ, তারা নিগৃহীত কনস্টেবল তারাগতিবাবুকে দু’দুবার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও, প্রসূনবাবুকে একবারও ডেকে পাঠিয়ে কী ঘটেছিল তা জানতে চায়নি। তদন্তকারীদের দাবি, চার্জশিটে তাঁরা যা বলার বলবেন।
তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাপস পালের ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের পরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন বিপ্লববাবু। সেই মামলায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সিআইডি দফতরে গিয়ে নিজের বয়ান রেকর্ড করাতে হয়েছে সাংসদকে। প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চড়-কাণ্ডেও হাইকোর্ট তেমন নির্দেশ দিলে তারাগতিবাবু সুবিচার পাবেন বলে মনে করছেন তাঁর সহকর্মীরা।
এ দিনই হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ৩০ নভেম্বর হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় বিজেপি নেতা অমিত শাহের সভায় যাওয়ার প্রতিবাদে ৩ ডিসেম্বর বিজেপি-র এক সমর্থকের গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে ‘টিএমসি’ লিখে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় সিআইডি তদন্ত দাবি করে বিজেপি-র আইনজীবী কৌশিক চন্দ ওই মামলা দায়ের করেছেন। এ ক্ষেত্রে পুলিশের দাবি, ওই ঘটনার আইনসম্মত ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। ওই যুবকের বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়। তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়।