নতুন দলেও জোর বিবাদ, বিদায় লক্ষ্মণের

এক মাসের মধ্যেই ফের দল বদলাতে হচ্ছে লক্ষ্মণ শেঠকে! সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরে নতুন যে দলে যোগ দিয়েছিলেন তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ, সেই ইনিংসও শুরু হয়েই শেষ! ন্যাশনাল কনফেডারেসি অফ ইন্ডিয়া (এনসিআই) নামে নতুন একটি সর্বভারতীয় দলে গত মাসেই যোগ দিয়েছিলেন লক্ষ্মণবাবু। সেই দলের রাজ্য সভাপতি পদেও বসানো হয়েছিল তাঁকেই। মাস ঘোরার আগেই রাজ্য সভাপতিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি করছেন এনসিআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ চক্রবর্তী!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২৪
Share:

এক মাসের মধ্যেই ফের দল বদলাতে হচ্ছে লক্ষ্মণ শেঠকে! সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরে নতুন যে দলে যোগ দিয়েছিলেন তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ, সেই ইনিংসও শুরু হয়েই শেষ!

Advertisement

ন্যাশনাল কনফেডারেসি অফ ইন্ডিয়া (এনসিআই) নামে নতুন একটি সর্বভারতীয় দলে গত মাসেই যোগ দিয়েছিলেন লক্ষ্মণবাবু। সেই দলের রাজ্য সভাপতি পদেও বসানো হয়েছিল তাঁকেই। মাস ঘোরার আগেই রাজ্য সভাপতিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দাবি করছেন এনসিআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ চক্রবর্তী! লক্ষ্মণবাবুর আবার পাল্টা দাবি, তাঁরাই বরং রাজ্য কমিটি ভেঙে দিয়ে দল থেকে বেরিয়ে এসেছেন! আপাতত লক্ষ্মণবাবুর লক্ষ্য, তাঁর পুরনো ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’কেই পুরোদস্তুর দল হিসাবে গড়ে তোলা।

সিপিএম থেকে বহিষ্কারের পরে পূর্ব মেদিনীপুরে তাঁর পুরনো অনুগামীদের নিয়ে ভারত নির্মাণ মঞ্চ গড়েছিলেন লক্ষ্মণবাবু। লোকসভা ভোটের পরে নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পাওয়া এনসিআইয়ের সঙ্গে তাঁদের এর পরে যোগাযোগ হয়। ওই মঞ্চের সকলেই প্রায় যুক্ত হয়েছিলেন ২৩ নভেম্বর। কিন্তু তার পরেই বেধেছে বিপত্তি। এনসিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক অরুণবাবুর অভিযোগ, লক্ষ্মণবাবু দুর্নীতি এবং দল-বিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। জানতে পেরে তাঁরা রাজ্য সভাপতিকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। অরুণবাবুর কথায়, “যে ধরনের অভিযোগে লক্ষ্মণবাবু ফেঁসেছিলেন, তাতে কেউ তাঁকে আশ্রয় দিত না। আমরা দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরে দলের গঠনতন্ত্রকে অগ্রাহ্য করে যে সব কাজ শুরু করলেন, আমরা বুঝতে পারলাম সিপিএমের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গৌতম দেবেরা ওঁর সম্পর্কে ঠিকই বলতেন! আমরা ওঁকে বহিষ্কার করেছি।” অরুণবাবুর আরও মন্তব্য, সিপিএম যা ৪৫ বছরে বুঝেছিল, তাঁরা তা তিন সপ্তাহে বুঝেছেন!

Advertisement

লক্ষ্মণবাবু আবার পাল্টা তোপ দাগছেন অরুণবাবুদের বিরুদ্ধে। আনন্দবাজারকে শুক্রবার তিনি বলেছেন, “দলটার সর্বভারতীয় কমিটিতে ১৯ জন আছেন বলে শুনেছিলাম। কিন্তু সভাপতি আর সম্পাদক ছাড়া কাউকে দেখলাম না! তার মধ্যে এক জন আবার ছদ্মনামে আছেন! এটা কোনও রাজনৈতিক দলে হয়?” অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন আছে বলে দাবি-করা ওই দলটির নেতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তাঁরাই রাজ্য কমিটির সভা ডেকে সদল এনসিআই থেকে বেরিয়ে এসেছেন বলে প্রাক্তন সাংসদের দাবি। তিনি জানাচ্ছেন, ভারত নির্মাণ পার্টির নামে এ বার তাঁরা কলকাতায় জমায়েত করার পরিকল্পনা করছেন। দলে নেওয়ার আগে অরুণবাবুরা কেন লক্ষ্মণবাবু সম্পর্কে খোঁজখবর নিলেন না? লক্ষ্মণবাবুই বা কেন এনসিআই নিয়ে ভাল করে জানলেন না? দু’তরফেরই জবাব তাঁরা পরস্পরকে বিশ্বাস করেছিলেন! এবং সেই বিশ্বাস ভেঙে গিয়েছে।

এনসিআইয়ের কুপন ছাপিয়ে লক্ষ্মণবাবুরা হলদিয়া বন্দরে টাকা তুলতে শুরু করেছিলেন বলেও তাঁর সদ্যপ্রাক্তন দলের অভিযোগ। দলের সতর্ক-বার্তাও তাঁরা কানে তোলেননি। অরুণবাবুর প্রশ্ন, “যখন কেউ ওঁর পাশে ছিল না, আমরা ওঁকে আশ্রয় দিয়েছি। সর্বভারতীয় একটা দল পাশে দাঁড়িয়েছে বলেই আদালত থেকেও উনি জেলায় যাওয়ার অধিকার পেয়েছেন। তার পরে এ সব আমাদের দল কেন বরদাস্ত করবে?” আবার লক্ষ্মণবাবুর পাল্টা “বিপদে পড়ে ওঁরা এখন আমাদের ঘাড়ে মিথ্যা অভিযোগ চাপাচ্ছেন!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement